অবিবাহিত মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার কেন হয় বিস্তারিত জানুন
অবিবাহিত মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার কেন হয় তা সাধারণত মাংসপেশি বৃদ্ধির কারণে হয়ে থাকে এছাড়াও মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া, কিংবা হরমোনের কারণে হয়ে থাকে। আবার কিছু কিছু সময় দেখা যায় বংশগত কারণেও হয়ে থাকে। অনেকে মনে করেন জরায়ুতে টিউমার বিবাহিতদের হয়ে থাকে এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। জরায়ু টিউমার প্রতিরোধের উপায় সম্পূর্ণভাবে নির্মল করা যায় না।সম্পূর্ণভাবে নির্মল করতে হলে জরায়ু টিউমার অপারেশন করে কেটে ফেলতে হয়। তবে কিছু কিছু নিয়ম মেনে চললে টিউমার স্বাভাবিকের রাখা যায়। এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে। আপনি চাইলে আর্টিকেলটি পড়ে সমস্ত বিষয় জানতে পারেন।
অবিবাহিত মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার কেন হয়
অবিবাহিত মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার কেন হয় তা বিস্তারিত আলোচনা করছি। সাধারণত মাংসপেশী থেকে এই টিউমার হয় যার জরায়ু টিউমার হিসেবে পরিচিত। তবে মাংসপেশীছাড়াও ভেতরে বাইরে এই লক্ষণ দেখা যেতে পারে।অনেকের এটা নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে। তারা মনে করে শুধু বিবাহিত এবং বেশি বয়সে মহিলাদের ক্ষেত্রে হতে পারে কিন্তু এ ধারণা যে সম্পূর্ণ ভুল তারা তারা জানে না।
অল্প বয়সী এবং অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রেও হতে পারে। অবিবাহিত মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার কেন হয় এই কথাটি বলতে গেলে অনেকটা বংশগত আবার গ্রোথ ফ্যাক্টর জীবিত কারণে দায়ী মনে করা হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদের মাসিকের সমস্যা থেকে জরায়ুর সমস্যা হতে পারে। মাসিকের সময় ও আগে তলপেট ব্যথা অনুভব হয়, অনিয়মিত ঋতুস্রাব, অতিরিক্ত ঋতস্রাব ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ শিশুর টিকা দিতে দেরি হলে কি করণীয়
জরায়ুতে মাংসপেশি অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে ফাইব্রয়েড বা মায়োমা টিউমার হতে পারে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যাদের বাচ্চা কাচ্চা হয়নি, বেশি বয়সে বিবাহের কারণে, কিংবা বাচ্চাকাচ্চা কম তাদের ক্ষেত্রে এই টিউমার দেখা যায়। নির্দিষ্ট টাইমে বাচ্চা গ্রহণ করা জরায় জন্য জরুরী বিষয়। গবেষকদের মতে, তারা জানায় যাদের কম বাচ্চা কাচ্চা এবং যাদের বাচ্চা হয়নি এইসব মহিলাদের ক্ষেত্রে জরায়ুর টিউমারের সমস্যাটা বেশি হয়ে থাকে।
তবে অবিবাহিতদের ক্ষেত্রেও এ লক্ষণটি দেখা যায়। যাদের প্রজনন ক্ষমতা বেশি অথচ বিয়ে না করায় এটা হয়ে থাকে। বিশেষ করে বেশি বয়সে বিয়ে করায়। অবিবাহিত মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার কেন হয় যাদের মনে এই প্রশ্ন আসা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
জরায়ু টিউমার প্রতিরোধের উপায়
জরায়ুতে যে টিউমার হয় তার ওপর নাম ইউটেরিন ফইব্রয়েড। সেটাকে সংক্ষেপে ফইব্রয়েড বলা হয়। ফইব্রয়েড তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। দেখা যায় যে যখন বাচ্চা নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে তখন আর বাচ্চা হয় না পরীক্ষা করে দেখা যায় যে জরায়ুতে টিউমার বা ফইব্রয়েড হয়েছে। জরায়ুতে টিউমার প্রতিরোধের উপায় প্রথমতঃ জরায়ু কেটে ফেলা,দ্বিতীয়তঃ জরায়ু থেকে টিউমার কেটে তুলে ফেলা।
জরায়ুতে টিউমারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের রয়েছে চিকিৎসা করতে গেলে দেখা যায় সমস্যা এক একজনের একই রকম হয় না। কারো ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক দেখা যায়। টিউমার যদি জরায়ুর বাহিরে হয় আর ছোট হয়ে থাকে এক্ষেত্রে অতি তাড়াতাড়ি বাচ্চা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়। বয়স যদি কম হয় আর সেক্ষেত্রে টিউমারের এর আকার যদি বড় হয়ে থাকে তাহলে অস্ত্রোপচারের কথা বলা হয়।
অস্ত্রোপচার দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি পেট কেটে আরেকটি ছিদ্র করে/ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে করা হয়। জরায়ু টিউমারের প্রতিরোধ করার উপায় এখন আধুনিক চিকিৎসায় অনেকটা সহজ হয়ে এসেছে। অত্যাধুনিক চিকিৎসায় অনেক সুন্দর পদ্ধতি রয়েছে যা মাতৃত্ব কখনো রেখে জরায়ুর টিউমার নিরাময় করে। কোন রকমের কাটা ছেঁড়া, রক্তপাতহীন ঝুঁকিমুক্তভাবে চিকিৎসা দিয়ে থাকে বর্তমানে বাংলাদেশেও।
অনেক সময় ডাক্তার কেন বলেন জরায়ুতে টিউমার প্রতিরোধ করা সবসময় সম্ভব হয় না, আবার অবিবাহিত মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার কেন হয় এই সব প্রশ্ন জানতে চাওয়া হয়। সমস্ত কিছু টিউমারের আকৃতির উপর নির্ভর করে। কিন্তু কিছুটা হলেও কমাতে পারেন। তার জন্য নিজেকে কিছু নিয়মের মধ্যে রাখতে হবে যেমন নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, সাথে আমি যুক্ত খাবার ফলমূল শাকসবজি স্বাস্থ্যকর খাদ্য খেতে হবে।
গবেষকরা পরামর্শ দিয়ে থাকে নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকায় কিছু নিয়মিত খাবার রাখতে হবে। যেমন দুধ, ডিম, মাছ, শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি খাদ্য মহিলাদের স্বাস্থ্য ও প্রজনন সমস্যাগুলি দূর করতে পারে। ভিটামিনের ঘাটতি দূর করার জন্য এসব খাদ্য খেতে বলেন।
অতিরিক্ত ওজন থাকার কারণে ফাইব্রয়েডের ঝুঁকি সম্মুখীন হতে পারে। তাই দ্রুত ডক্টরের পরামর্শ নেয়া উচিত আমি মনে করি। কেননা একজন ভালো গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চললে ফাইব্রয়েডের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ফাইব্রয়েড হরমোনের কারণে হয়ে থাকে। তাই আপনি যথাসময়ে দ্রুত ডক্টরের চিকিৎসা নিন।
জরায়ুতে টিউমার হলে কি বাচ্চা হয়
জরায়ুত টিউমার হলে কি বাচ্চা হয় সে ক্ষেত্রে বলবো সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে বাচ্চা হয়ে থাকে। তবে এটি সম্ভাবনা খুবই কম যদি টিউমার অনেক বড় হয়ে যায়। তাছাড়া জরায়ুতে টিউমার তিন ধরনের হয়ে থাকে। সাব সেরাস ফাইব্রয়েড হলে তেমন একটা সমস্যা দেখা নাও দিতে পারে। তবে সাব সেরাস ফাইব্রয়েড টিউমার জরায়ুর সার্ভিক্স এর মুখে কিংবা টিউবের কাছে হলে গর্ব ধারণ হতে বাধা দেয়। এতে বারবার গর্ভপাত হয়।
আর জরায়ুর ভিতরে টিউমার হলে বাচ্চা না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।যেটাকে মায়োমা ফাইব্রয়েড বলা হয়। এটি জরায়ুর মধ্যে হয়ে থাকে। টিউমারটি অতিরিক্ত বড় হয়ে গেলে ভ্রূণ বেড়ে উঠতে পারে না, নষ্ট হয়ে যায়। এতে বারবার গর্বপাত ঘটে বা বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা হওয়া উচিত।
জরায়ুতে টিউমার হলে কি কি সমস্যা হতে পারে
জরায়ুতে টিউমার হলে কি কি সমস্যা হতে পারে এবং অবিবাহিত মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার কেন হয় তা আমি বিস্তারিত আলোচনা করব । প্রথমত বলব জড়ায়ুতে টিউমার হলে বাচ্চা হতে সমস্যা করে। এক্ষেত্রে না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। টিউমার যা ভ্রুনকে সুস্থিত হতে বাধা দেয় এক্ষেত্রে বারবার গর্ভপাত বা বা বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।অতিরিক্ত বড় হয়ে গেলে অপারেশন করতে হয়।
বংশগত কারনে, মাসিকের সমস্য থেকে,বেশি বয়সে বিয়ে হলে,কারো ক্ষেত্রে প্রজনন ক্ষমতা বেশি থাকলে,হরমনের সমস্য থাকলে এই সমস্য হয়। আর সেটা বিবাহিত, অবিবাহিত সবার ক্ষেত্রেহতে পারে। জরায়ুতে টিউমার সাধারণত হয়ে থাকে ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের। এক্ষেত্রে বাচ্চা নেওয়ার আগেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
জরায়ুতে টিউমার এর লক্ষণ
সাধারণত শুরুতে জড়ায়ুতে টিউমারের তেমন কোন লক্ষণ পাওয়া যায় না। কখনো কখনো রোগী নিজেই বুঝতে পারেন না যে জরায়ুতে টিউমার নিয়ে ভুগছেন। টিউমারটা দীর্ঘদিন হয়ে এলে তখন আস্তে আস্তে কিছু কিছু সমস্যায় রোগী ভুগতে পারেন। তবে লক্ষণ বোঝা মাত্রই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে কোনোভাবে অবহেলা করলে চলবে না। কারণ একটি নারীর মাতৃত্বের সংবেদনশীল অঙ্গ হল জরায়ু। তাই টিউমার যত বেশি বড় হতে থাকবে তত বন্ধ্যাত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
মাসিক দীর্ঘস্থায়ী হয়ঃ জরায়ুতে যখন টিউমারের লক্ষণ দেখা দেয় তখন মাসিক দীর্ঘ সময় হয়ে থাকে কিংবা ঘন ঘন অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে।
তলপেট ফুলে ওঠাঃ জরায়ুতে যখন টিউমার বা ফাব্রয়েড হয় সেটা ছোট মটর দানা থেকে বড় আকারে তরমুজের মতো হয়ে থাকে। তল পেটে অস্থির ব্যথা এবং ফুলে উঠে।
অতিরিক্ত রক্তস্রাব ও ব্যথাঃ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রক্তস্রাব সাথে তলপেট ব্যথা হয়ে থাকে। স্বাভাবিকের থেকেও বেশি রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে।
তলপেটে চাকা অনুভবঃ তলপেটে চাকা চাকা ব্যথা অনুভব হয়। মাঝে মাঝে তলপেটের পুরোটুকু ব্যথা হয়।
মূত্রথলীতেচাপঃ কখনো কখনো দেখা যায় মূত্রথলিতে চাপ সৃষ্টি হয়। হলে ঘন ঘন প্রসাব করার প্রয়োজন পড়ে। বেশিক্ষণ প্রসাব ধরে রাখলে ব্যথা অনুভব হয়, তলপেট ভারী ভাব হয়।
সহবাস কালীন ব্যথা অনুভবঃ জরায়ুর মুখে ফাইব্রয়েড হলে সহবাসের সময় অস্বস্তি ব্যথা হতে পারে।
গর্ভপাত বা বন্ধ্যাত্বঃ গর্ভপাত বা বন্ধ্যাত্বের বেশিরভাগ কারণ জরায়ুতে ফাইব্রয়েড হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। জরায়ুতে টিউমার থাকা অবস্থায় বাচ্চা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যা খেলো পিয়ান টিউবকে বন্ধ করে গর্ভধারণে বাধা সৃষ্টি করে। অনেক বড় হয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব হয়।
সাধারণত জরায়ুতে সমস্যা হলে উপরের এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। জরায়ুতে টিউমার সাধারণত একটা আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমেই ধরা পড়ে। এইসব সমস্যা দেখা দেয় মাত্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
জরায়ুর টিউমার থেকে ক্যান্সার
জরায়ুর টিউমার থেকে ক্যান্সার হয় এই ধারণা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল হয়ে থাকে। জরায়ুতে টিউমার মানেই যে ক্যান্সার এটা মোটেও সঠিক নয়। জরায়ুতে টিউমার সাধারণত আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে ধরা পড়ে তাই বলে কি এটাই ক্যান্সার তা নয়। টিউমার সাধারণত কিছু লক্ষণ থাকে অতিরিক্ত রক্তস্রাব তলপেটে ব্যথা কোমর ব্যথা টিউমারে সাধারণত বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
টিউমার যদি আয়তনে বড় হয় তাহলে প্রসবের সমস্যা, মলত্যাগের সমস্যা, কোমর বা পায়ের যন্ত্রণা হতে পারে। আর যদি প্রেসার ইউরেটার অর্থাৎ প্রসববাহি নালিতে যায় তাহলে কিডনির সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে গর্ব অবস্থায় বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। টিউমারের আয়তনের উপর ভিত্তি করে রোগের লক্ষণ নির্ভর করে।যদি কখনো টিউমারের অপারেশনের ক্ষেত্রে জরায়ুর সঙ্গে দুই ওভারি বাদ দিতে হয় সেই ক্ষেত্রে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে
লেখকের মন্তব্যঃ আজকের আঁটিকেলে জরায়ুতে টিউমার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই আর্টিকেলটি পরে আপনি যদি উপকৃত হন, তাহলে আপনার আশেপাশের পরিচিতদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকে সচেতন করে তুলুন। তারাও যেন এই রোগ সম্পর্কে সচেতন হয়। আরো বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।
সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url