শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় - সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াতের ফজিলত
শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় এবং এর ফজিলত জানা অবশ্যই মুসলমানদের জন্য গুরুত্ব পূর্ণ। সূরা আল কাহাফ যে ব্যক্তি নিয়মিত পড়বে সে তার দাজ্জালের ফিতনা থেকে রেহাই পাবে পবিত্র কুরআনুল কারীমে বলা হয়েছে। তাই আমাদের অবশ্যই সূরা কাহাফ পাঠ করা লাগবে। সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে সূরা কাহাফ এর অলৌকিক ঘটনা, সূরা কাহাফের শেষ ১০ আয়াতের ফজিলত ও জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়ার ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি সূরা কাহাফ এর বিষয়ে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে আসতে পারেন।
সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াতের ফজিলত
শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় এবং সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চাইলে পুরো আর্টিকেলটি ধৈর্য ধরে পড়ুন। একজন মুসলিম হিসেবে এই ফজিলতপূর্ণ আমল গুলো জানা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। জামায়াতের দিন অর্থাৎ জুমার দিন তাই ঈদ মনে করা হয়। এবং আল্লাহ তাআলা জুমার দিনে জামাতে নামাজ পড়ার আদেশ করেছেন। আসুন জেনে নেই সেই ফজিলতপূর্ণ আমল সম্পর্কে।
পবিত্র কুরআনুল কারিমে বলা আছে, ‘যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করে নিবে তাকে আল্লাহ তা'আলা দাজ্জালের অনিষ্ট হতে নিরাপদ রাখবে।’ (মুসলিম, মিশকাত)।
‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তার ঈমানের নূর এ জুমা হতে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে।’ ( মিশকাত ২১৭৫)
আর যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ প্রতি জুম্মায় পাঠ করবে, তার জন্য কিয়ামতের দিন এমন একটি নূর হবে যা তার অবস্থানের জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত আলোকিত হয়ে যাবে। আর ‘যে ব্যক্তি সূরা আল কাহাফ এর শেষ দশটি আয়াত পাঠ করবে, সে জীবিত অবস্থায় দাজ্জাল আসলেও তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সিলসিলায়েসহি সহীহ: ২৬৫১)
‘যে ব্যক্তির জুমার দিনে সূরা কাহাফ পাঠ করল, কিয়ামতের দিনে তার পায়ের নিচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত নুর আলোকিত হল এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে গুনাহ মাফ হলো।’
সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে ইসলামের মৌলিক কয়েকটি বিষয় রয়েছে। “ আর তাদের সতর্ক করার জন্য যারা বলে যে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন, এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিল না। এই উদ্ভট কথাও তাদের মুখ থেকে বের হয় তারা কেবল মিথ্যাই বলে।” (সূরা কাহাফ আয়াত ৪-৫)
সূরা কাহাফের শেষ ১০ আয়াতের ফজিলত
শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় এবং সূরা কাহাফের শেষ ১০ আয়াতের ফজিলত একজন মুসলিম হিসেবে এগুলো জানা তেলাওয়াত করা অবশ্যই জরুরী। সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াতের ফজিলত যেমন রয়েছে, তেমনি সূরা কাহাফের শেষ ১০ আয়াতের ফজিলতও রয়েছে। আজকে আমরা জানবো হাদিসের আলোকে শেষ ১০ আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে।
এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত ও সূরা কাহাফের শেষ ১০ আয়াত প্রতিনিয়ত পড়বে তাকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ রাখা হবে।’ (মুসলিম হাদিস: ৮০৯)
জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। পবিত্র কোরআন শরীফের ১৫ পাড়ার ১৮তম সূরা “সূরা আল কাহাফ” রয়েছে। কেউ যদি সূরা কাহাফ সম্পন্ন পাঠ করতে না পারে, তাহলে সে যেন সূরা কাহাফ এর প্রথম ১০ আয়াত এবং শেষ দশ আয়াত পাঠ করে। এ থেকে বোঝা যায় সূরা কাহাফ এর প্রথম ১০ আয়াত এবং শেষ ১০ আয়াত ফজিলতপূর্ণ। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে দাজ্জালের হাত থেকে মুক্তি দিন।
শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয়
শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি সূরা কাহাফ সম্পর্কে জানতে চান এবং শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় জানতে চাইলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে আমরা “সূরা আল কাহাফ“ কখন পড়াতে হয় তার সঠিক সময় বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি ধৈর্য ধরে আর্টিকেলটি পুরো পড়তে পারেন।
বৃহস্পতিবার দিন সূর্য ডোবার পর থেকে বা সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সূর্য ডোবার পর্যন্ত জুমার রাত্রি বলে।এই সময়ে সূরা আল কাহাফ পড়ার সঠিক সময়। তবে উল্লেখ্য যে,এই সূরাটি শুধু এক বৈঠকেই পড়া জরুরী বিষয় নয়, বরং এটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত একাধিক বৈঠকে একটু একটু করে তেলাওয়াত করে শেষ করলেও একই সওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাল্লাহ। এর সাথে অন্যান্য নফল ইবাদত করা উত্তম। জুমার দিন অন্যান্য দিনের থেকে ফজিলতপূর্ণ একটি দিন। জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন ধরা হয়।
সূরা কাহাফের ফজিলত হাদিস
সূরা কাহাফ এর ফজিলত হাদিস এবং শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় এইসব জানা এবং তা আমল করা আমাদের মুসলমানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূরা কাহাফ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সূরা যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। নিয়মিত এই সূরাটি তেলাওয়াত করলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায় বিশেষ করে জুমার দিনে তেলাওয়াত করা অনেক ফজিলত রয়েছে।
সূরা কাহাফ এর অলৌকিক ঘটনা
শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় এবং সূরা কাহাফ এর অলৌকিক ঘটনা রয়েছে। আপনি যদি এই সব বিষয়ে জানতে চান? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে আপনি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন সূরা কাহাফ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সূরা কাহাফ এর অলৌকিক ঘটনা চমৎকার চমৎকার ঘটনা। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। আসুন আমরা সেই অলৌকিক ঘটনা সম্পর্কে জেনে নেই।
“একদা এক ব্যক্তি সূরা আল কাহাফ পড়ছিল ঠিক তখন লোকটি দেখতে পেল একখণ্ড মেয়ে তার মাথার উপর তাকে ছায়া দিছে। লোকটি রাসূল সাঃ এর কাছে ঘটনাটি খুলে বললেন। রাসূল সাঃ লোকটিকে বললেন হে অমুক তুমি সূরাটি পড়তে থাকো, কারণ এটি ছিল আল্লাহর রহমত যা কোরআন তেলাওয়াতের কারণে অবতীর্ণ হয়েছিল।” (মুসলিম- ১৭৪২)
সূরা কাহাফ এর ব্যাপারে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ আগেই সতর্ক করে দিয়েছেন,‘আদম সৃষ্টির পর থেকে বিচার দিবসের আগ পর্যন্ত দাজ্জালের চেয়ে বড় আর কোন ফিতনা হবে না।’ (মুসলিম শরীফ) এটি দাজ্জালের বিরুদ্ধে একটি ঢালস্বরূপ। কোরআন মুখস্ত করলে ঈমান মজবুত হয় বৃদ্ধি পায়।
গুহাবাসীর ঘটনাঃ “হযরত ঈসা আঃ এর উর্ধ্বারোহোনের ঘটনার পর তখনকার অত্যাচারী শাসক দ্বীন ও শরীয়ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং ঈসা আঃ এর অনুসারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ করে। তখন একদল ঈমানদার যুবক আত্মগোপনের জন্য গুহায় প্রবেশ করে। তাদের ঘটনার কারণেই সুরাটিকে কাহাফ হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।
ওই সময় তাদের ঈমান রক্ষা করার জন্য আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেছিল, তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা চেয়েছিল। তারা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন এর মায়া ত্যাগ করে আত্মগোপনের জন্য দূর অজানায় পাড়ি দেয় এবং তারা এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নেয়। আল্লাহ চাইলে কি না পারে, আল্লাহ তাদের সেখানে ৩০৯ বছর ঘুমন্ত অবস্থায় রেখেছিলন। ৩০৯ বছর পর তাদেরকে মহান আল্লাহ তা'আলা আবার জাগ্রত করলেন।
ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর তারা তাদের কাছে যে মুদ্রা ছিল তা দিয়ে খাবার কেনার জন্য তিনজনের একজনকে পাঠিয়ে দিলে। খাবারের জন্য যখন শহরে প্রবেশ করল, দেখতে পেল শহরটি সম্পূর্ণ অন্যরকম বদলে গেছে। দোকানদারকে প্রাচীন মুদ্রা দেওয়াই দোকানদার হতবিহ্বল হয়ে পড়ল। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত রাজার কানে পৌঁছালো রাজার দরবারে যুবকটির কাহিনী শুনে অবাক হলেন।
রাজা ও তার সভার সদস্যদের নিয়ে সেই গুহায় গেলেন প্রবেশ অলৌকিকভাবে গুহার মুখ বন্ধ হয়ে যায়।৩০০ বছরের পরের রাজা ছিলেন ঈমানদারদের প্রতি সহানুভূতিশীল। তিনি বুঝতে পারলেন এই ঘটনা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ তাই গুহার মুখ সংরক্ষিত করে দিলেন। এ থেকে বোঝা যায় আল্লাহ মানুষের জীবন মরণ সবকিছুই তার ক্ষমতায় রাখেন।”
জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়ার ফজিলত
জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়ার ফজিলত অন্যান্য দিনের থেকে অনেক। আপনি কি ঝুমার দিনের সূরা কাহাফ পড়ার ফজিলত কি জানতে চাচ্ছেন? কি তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের আর্টিকেলে জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়ার ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে কি বলেছে তা আলোচনা করব।
যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন। ইবনে ওমর রাঃ আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাঃ বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার জন্য তার পায়ের নিচের থেকে আসমানের মেঘমালা পর্যন্ত আলোর বিচ্ছুরিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।” ( সহীহুল জামে, ৬৪৭১)
আবু সাঈদ আল-খুদরি রাঃ হতে বর্ণিত,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার রাতে সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তার মাঝেও আল-বাইতুল আতিক এর মধ্যবর্তী স্থান আলোকিত করে দিবে।”
সূরা কাহাফ পড়ার সঠিক সময়
শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় এবং সূরা কাহাফ পড়ার সঠিক সময় জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেল আপনার জন্য, আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এর আর্টিকেলে সূরা কাহাফ করার সঠিক সময় জানবো এবং সূরা কাহাফ পড়ার সময় হাদীস শরীফে কি বলা আছে তা উল্লেখ করব। আপনি এই সম্পর্কে পড়তে চাইলে তাহলে আমাদের সাথে থাকুন। আসুন জেনে নেই সূরা কাহাফ পড়ার সঠিক সময়।
সূরা আল কাহাফ জুমার দিনে পড়তে পারবেন। জুমার রাত শুরু হয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার সূর্য অস্তে যাওয়ার আগ পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে যেকোনো সময়ে আপনি চাইলে অল্প অল্প করে সূরাটি পড়ে শেষ করতে পারেন। জুমার দিন বা রাতের ব্যাপারে কিছু কিছু রেওয়াতে জুমার দিন বলা হয়েছে আর কিছু কিছু রেওয়াতে জুমার রাত বলা হয়েছে কিন্তু সময় একই।
আজকের শেষ কথা
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলে শুক্রবার সূরা কাহাফ কখন পড়তে হয় এবং এর ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনার যদি আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগে এবং উপকৃত হলে আর নতুন নতুন বিভিন্ন তথ্য পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন।
কোন তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটের কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমরা চেষ্টা করব সঠিক সমাধান আপনাদের সামনে তুলে ধরতে। এবং আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের সাথে এবং আত্মীয়দের সাথে শেয়ার করতে পারেন। তারাও যেন এই আমল সম্পর্কে জানতে পারে।
সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url