হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে -হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে
হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে -হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে এইসব জানা একজন মুসলমান মহিলার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মহিলাদের হায়েজ অবস্থায় ইবাদত করার যে যে আমলগুলো রয়েছে তার মধ্যে কিছুগুলো বাদ দেওয়া আল্লাহ হুকুম করে দিয়েছেন আর কিছু ইবাদত হায়েজ অবস্থায় করা যায়, হায়েজ অবস্থায় দরুদ পড়া যাবে কি অবশ্যই জানতে হবে।
আরো হায়েজ অবস্থায় আরো কি কি বিষয় পড়তে পারবেন। যেমন পিরিয়ডের সময় কি সূরা পড়া যায়, হায়েজ অবস্থায় মোবাইলে কুরআন পড়া যাবে কি, হায়েজ অবস্থায় আজানের উত্তর দেওয়া ইত্যাদি আরও বিষয়ে আলোচনা করেছি আপনি যদি এই সব বিষয়ে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত পড়ে আসতে পারেন।
হায়েজ অবস্থায় দরুদ পড়া যাবে কি
হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে? হায়েজ অবস্থায় দুরুদ পড়া যাবে কি জানতে চাচ্ছেন? হ্যাঁ এ প্রশ্নটি সকল মুসলমান বোনদের মধ্যে আসে । তবে অবশ্যই জানতে হবে হায়েজ অবস্থায় দরুদ পড়া যাবে কি? যদি আপনি হায়াত অবস্থায় দিনগুলো ইবাদতের মধ্যে থাকতে চান তাহলে আপনাকে এই সময়ে কি কি আমল করা যাবে আর কি কি আমল করা যাবে না এই বিষয়ে ক্লিয়ার হবে। আসুন জেনে নেই আজকে হায়েজ অবস্থাস দরুদ পড়া যাবে কিনা সেসব সম্পর্কে।
আমি আমার নিজের কথা দিয়েই বলছি, আমি যখন হায়েজ অবস্থায় থাকতাম তখন আমলগুলো থেকে বিরত থাকতাম। তারপর মাথাতে আসলো আসলে হায়েজ অবস্থায় কি কি আমল করা যাবে আর কি কি আমল করা যাবে না হায়েজ অবস্থায় দরুদ পাঠ করা যাবে কিনা প্রশ্ন জাগলো তখন বিভিন্ন হাদিসের বই থেকে অনেক কিছুই শিখতে পারলাম জানতে পারলাম।
বিভিন্ন হাদিসে দেখেছি এক হাদীসে বর্ণিত আছে হযরত মামার (রাঃ)তানহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি জুহরীকে প্রশ্ন করলাম, হায়েজ অবস্থায় নারী ও যার উপর গোসল ফরজ হয়েছে সে আল্লাহর জিকির করতে পারবে? তিনি বললেন হ্যাঁ পারবে। আমি আবারো প্রশ্ন করলাম কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে? তিনি বললেন না। (মুসান্নফে আব্দুর রাজ্জাক: ১৩০২)।
হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে আর কি কি ইবাদত করা যাবে না সেসব বিষয়ে জেনেছি।সবচেয়ে কনফিউ ছিলাম হায়েজ অবস্থায় দরুদ পড়তে পারব কিনা এখন সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছি। এখন হায়েজ অবস্থায় আমি নিয়মিত দরুদ পাঠ করি ইনশাল্লাহ।
হায়েজ অবস্থায় মোবাইলে কুরআন পড়া যাবে কি
হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে? হায়েজ অবস্থায় মোবাইলে কুরআন তেলাওয়াত পড়া যাবে কি আপনার যদি এই প্রশ্নটি থেকে থাকে, তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে আমরা আর্টিকেলের ভিতরে সঠিক তথ্যগুলো তুলে ধরেছি। আপনি এখান থেকে জেনে নিতে পারবেন হায়েজ অবস্থায় মোবাইলে কোরআন পড়া যাবে কি না। আসুন জেনে নেই হায়েজ অবস্থায় কুরআন পড়ার বিষয়ে।
না এই সময়ে আপনি মোটেও এটি করতে পারবেন না কারণ আল্লাহ তায়ালা মহিলাদের কিছু সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, এই সময় কিছু আমল আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিয়েছেন। আর তা হল মেয়েদের হায়েজ এর সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন নামাজ পড়া কোরআন তেলাওয়াত করা থেকে বিরত থাকতে। কোরআন মুখস্তর ক্ষেত্রে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়া জায়েজ আছে।
হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে
হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে? এবং হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে? এক্ষেত্রে বলবো কোন কোন ইমামগণ বলেন হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে না। যেহেতু এটা কুরআনের আয়াত তাই নাপাক অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সে ক্ষেত্রে আয়াতুল কুরসি কোরআনের অংশ। আবার কোন কোন হাদিসে বলা হয়েছে এটা নিজেকে হেফাজতের জন্য পাঠ করা যেতে পারে। আবার কেউ কেউ বলেছে কোরআনের দোয়াগুলো হায়েজ অবস্থায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়া যাবে।
পিরিয়ডের সময় কি সূরা পড়া যায়
হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে? পিরিয়ডের সময় কি সূরা পড়া যায়? আপনি এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইছেন তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে আমি আপনাদের সামনে পিরিয়ডের সময় আল্লাহর ইবাদত নিয়ে আলোচনা করেছি। তার মধ্যে পিরিয়ডের সময় কি সূরা পড়া যায় এই বিষয় নিয়েও আলোচনা করতে চলেছি। আপনি জানতে আর্টিকেলটি ধৈর্য ধরে পড়তে থাকুন। নিচে এই বিষয়ে আলোচনা করা আছে।
হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে? পিরিয়ডের সময় কোন কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে না সেটা মুখস্থ হোক আর দেখে হোক তবে মুখস্থর জন্য ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়া যাবে। সূরা পড়া সুন্নত কিন্তু আল্লাহতালা পিরিয়ড চলাকালীন কোরআন পড়ার বিধান দেয় নি। তাই সে ক্ষেত্রে বলবো সূরা কুরআনের অংশ। তবে আপনি মোবাইল দিয়ে শুনতে পারবেন। আর সেটা কুরআন তেলাওয়াত শুনতে পারবেন।
নাপাক অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত শোনা যাবে কি
হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে? নাপাক অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত শোনা যাবে কি তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। একজন নারী প্রত্যেক মাসে নির্দিষ্ট সময়ে হায়েজ অবস্থায় থাকে এই সময়টি তারা নাপাক থাকে। আল্লাহ তায়ালা মেয়েদের ক্ষেত্রে এই সময়ে কিছু আমল মাফ করে দিয়েছেন।
আবার কিছু আমল অবস্থায়ও করা যায়। তাহলে নাপাক অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত সম্পর্কে জেনে নেই। হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে তার ভিতরে আপনি নাপাক অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন না কিংবা স্পর্শ করতে পারবেন না। তবে আপনি নাপাক অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত শুনতে পারবেন।
সূরা ওয়াকিয়া আয়াত নাম্বার ৭৯; এখানে বলা হয়েছে মুতাহ্হারুন শব্দটি নিষ্পাপ ও অজু গোসল করে পবিত্র দুইটি অর্থ ব্যবহার হয়। তাই আপনি ওযু ছাড়া কুরআন তেলাওয়াত মুখস্ত বলতে ও শ্রবণ করতে পারলেও স্পর্শ করতে পারবেন না।
হায়েজ অবস্থায় আজানের উত্তর
হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে? তার ভিতরে একটি হলো হায়েজ অবস্থায় আজানের উত্তর। আযানের উত্তর দেওয়া মহিলাদের জন্য মুস্তাহাব। মহিলাদের হায়েজ অবস্থায় আজানের উত্তর দেওয়া জায়েজ আছে। এতে কোন সন্দেহ নেই আপনি হায়েজ অবস্থায় আযানের জবাব দিতে পারবেন। আপনি যদি আজানের উত্তর জেনে না থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেল থেকে শিখে নিন।
আযানের সময় কোন কথাবার্তা না বলে মনোযোগ দিয়ে আজান শ্রবণ করা এবং আযানের জবাব দেওয়া অনেক ফজিলত রয়েছে। আযানে মুয়াজ্জিন যা বলেন তার সাথে সাথে সেগুলো বলা শুধু মুয়াজ্জিন যখন বলবে, ‘হাইয়া আলাস সালাহ’,এবং‘ হাইয়া আলাল ফালাহ’ বলবে তখন ‘ লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলতে হবে।
হায়েজ অবস্থায় কুরআন পড়ার বিধান
হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে? হায়েজ অবস্থায় কুরআন পড়ার বিধান নেই শুধুমাত্র হায়েজ অবস্থায় অর্থাৎ যার উপর গোসল করা ফরজ হয়েছে। এই সময়ে কোরআন তেলাওয়াত, নামাজ আদায় করা ও রোজা রাখা বাদে যেমন দোয়া দরুদ করা, তাসবিহ্ পাঠ করা, ইস্তেগফার করা এবং আল্লাহর অন্যান্য জিকির করা যাবে। হায়েজ অবস্থায় কুরআন পড়ার বিধান কি রয়েছে আসুন তা জেনে নেই।
হযরত আয়েশা রাঃ হায়েজ অবস্থায় তাকে নবী করিম সাঃ বলেছেন, ‘অন্যান্য হাজিরা যা করে তুমিও তাই কর ‘ কিন্তু পবিত্র হওয়ার আগ পর্যন্ত বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করতে পারবে না’। (সহীহ মুসলিম,হাদিস: ১২১১) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মহিলাদের হায়েজ হতো তিনি তাদের কোরআন তেলাওয়াত করতে নিষেধ করতেন না।
হায়েস অবস্থায় মহিলারা কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবে না এ মর্মে কোন স্পষ্ট সহিহ্ দলিল নেই; শায়খুল ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ রাঃ বলেন।
হযরত আয়েশা রাঃ আনহা বলেন, নবী আকরাম সাঃ সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতেন। (সিলসিলা সহিহ্, হাদিস: ৬৩৪) এই হাদিসটি দ্বারা বোঝা যায় যে, নবী আকরাম সাঃ ওযু-ওযুবিহীন, পবিত্র-অপবিত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে, বসে, হেলান দিয়ে, হাটা অবস্থায় আল্লাহর জিকির করতেন। জিকির অর্থ বোঝায় তাসবিহ পাঠ করা, ইস্তেগফার করা, দুরুদ পড়া ইত্যাদি।
হযরত আবদুল্লাহ বিন ওমর রাঃ হতে বর্ণিত, নবী করীম সাঃ বলেছেন, ঋতুবর্তী মহিলা এবং গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে না। (সুনানে তিরমিজি হাদিস নাম্বার ১৩১) তবে কোরআন স্পর্শ না করে মুখস্থ করতে তেলাওয়াত করতে পারেন তবে সেক্ষেত্রে আয়াত সম্পূর্ণ না পড়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়তে হবে।
হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে? সে প্রশ্নে হাদিসে কোরআন তেলাওয়াত করা যাবে, কিন্তু স্পর্শ করা যাবে না আবার কোন কোন হাদিসে বলেছেন, কোরআন তেলাওয়াত বা কোরানের আয়াত সমূহ পড়া যাবে না তবে অন্যান্য জিকির আজগার করা যাবে। তবে এর কোন স্পষ্ট সহি দলিল পাওয়া যায়নি।
হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে
হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে? হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে অবশ্যই একজন মুসলিম মেয়ে হিসেবে জানা দরকার। কারণ ঋতুবর্তী কালীন মহিলাদের কিছু আমল থেকে বিরত থাকতে হয়। আবার কিছু আমল ঋতুবর্তী কালীন করা যায়। কিছু কিছু আমল আল্লাহ তায়ালা মেয়েদের ক্ষেত্রে হায়েজ অবস্থায় মাফ করে দিয়েছেন সেগুলোর আর কাজা তুলতে হবে না। আসুন জেনে নেই হায়েজ অবস্থায় ইবাদত গুলো।
প্রথমে জানবো হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত বাদ রাখতে হয়। পিরিয়ড চালাকালিন নামাজ পড়া যাবে না। এবং পরবর্তীতেও এই কাজা নামাজ তুলতে হবে না। আল্লাহ তায়ালা যে সম্পূর্ণ মাফ করে দিয়েছেন। রোজা রাখা যাবে না, তবে রোজার ক্ষেত্রে পিরিয়ড ভালো হয়ে গেলে কাজা রোজা রাখতে হবে। এটা সাময়িক সময়ের জন্য মাপ হয়। নামাজ চলতি অবস্থায়ও পিরিয়ড হলে ওই নামাজের কাজা তুলতে হয় না, মাফ হয়ে যায়।
কিছু হাদিসে কোরআন তেলাওয়াত নিষেধ করেছে আবার কিছু হাদিসে বলা আছে হায়েয অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে। তবে কোরআন মুখস্তর ক্ষেত্রে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে তেলাওয়াত করা যায় ধরুন আপনি মুখস্ত করার জন্য তেলাওয়াত করছেন সেই ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ না পড়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়তে হবে।
হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে? হায়েজ অবস্থায় যদি কোন ব্যক্তি দোয়ার নিয়তে আয়াতুলকুরছি পরে তাহলে জায়েজ আছে। আবার যদি কোন মহিলা শিক্ষক কুরআন শিক্ষা দিতে গিয়ে এ অবস্থায় দুই একটা শব্দ ভেঙ্গে বানান করে বুঝিয়ে দিতে পারেন। পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় দোয়া, তওবা, জিকির, তাসবিহ পাঠ করতে পারেন। হায়েজ অবস্থায় কালেমা পড়া যায়।
আজকের শেষ কথা
এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন আজকে আর্টিকেলটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল একজন মুসলিম মহিলার ক্ষেত্রে। হায়েজ অবস্থায় আয়াতুল কুরসি পড়া যাবে ,হায়েজ অবস্থায় কি কি ইবাদত করা যাবে এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url