রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় এবং এর করণীয় কি?
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হবে। রাসেল ভাইপার বর্তমানে খুবই ভয়বাহ সাপ। এই সাপের দংশন করলে মৃত্যুর ঝুঁকি ৯০% যদিও বেঁচে থাকে তবে পঙ্গু হয়ে যাবে। তাই রাসেলস ভাইপার উত্তেজিত হলে কি করে? আমাদের অবশ্যই এই সাপের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
রাসেল ভাইপার সম্পর্কে আরও আলোচনা করা হয়েছে। যেমন রাসেলস ভাইপার কামড়ের চিকিৎসা? রাসেল ভাইপার ও পাইথন চেনার উপায়? আরও বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে আপনি চাইলে সম্পর্কে জানতে পারেন। সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে পড়ুন।
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয়
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় আমাদের জানা এখন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কারণ ইতিমধ্যে বাংলাদেশ অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। বন্যার স্রোতে ভারত থেকে আসা রাসেল ভাইপার খুবই মারাত্মক একটি সাপ। এই সাপ অন্যান্য সাপের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। রাসেল ভাইপার সাপ কামড়ালে বোঝা যায় অন্যান্য সাপ কামড় দিলে সেই জায়গাটির সহজে টের পাওয়া যায় না।
কিন্তু রাসেল কামড় দিলে জায়গাটা সাথে সাথে ফুলে যায় এবং সাপটির সাথে সাথে সেখান থেকে চলে যায় না। রাসেল ভাইপার অত্যন্ত বিষধর সাপ। এইসব কামড় দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করতে হয়। এই সাপের ছোবলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি, যদিও মৃত্যু না হয় তবে যে জায়গায় কামড় দিয়েছে সে জায়গায় পচন ধরে। শেষ পর্যায়ে সেই অংশ কেটে ফেলতে হয়।
রাসেলস ভাইপার উত্তেজিত হলে কি করে?
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় এবং রাসেলস ভাইপার উত্তেজিত হলে কি করে? এটা সবারই জানার দরকার। আজকে আমরা রাসেল ভাইপার সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। রাসেল ভাইপার বর্তমান সময়ে মারাত্মক প্রাণঘাতক বিষধর সাপ।রাসেল ভাইপার সাপ উত্তেজিত হলে প্রচুর পরিমাণ বিষ ঢালে যা ভারতীয় কোবরা থেকেও বেশি বিপদজনক হয়।
রাসেলস ভাইপার কামড়ের চিকিৎসা?
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় এবং রাসেলস ভাইপার কামড়ের চিকিৎসা? জেনে রাখা দরকার। রাসেল ভাইপার আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামবাসী এবং সকলেরই।বিশেষ করে পর্দার তীরবর্তীচরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে রাসেল ভাইপার আক্রমণ বেশি দেখা দিচ্ছে। এর কামড়ের ফলে প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়ছে। রাসেল ভাইপার কামড়ের চিকিৎসা দেরি না করে তাৎক্ষণিকভাবে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এতটাই মারাত্মক বিষ যে কামরের জায়গায় পচন ধরতে পারে।
বাংলাদেশের বিষধর সাপের তালিকা
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় জানার পাশাপাশি বাংলাদেশের বিষধর সাপের তালিকা গুলো জানা দরকার। কারণ সাপের সংখ্যা অনেক বেশি কিন্তু বিষধর সাপের সংখা মাত্র কয়েকটি।আসুন সেই সাপের নাম গুলো জেনে নেই।
বিষধর সাপের নাম | সাপের আকৃতি | যে অঞ্চলে দেখা যায় |
---|---|---|
রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া | মাথা ত্রিভুজ আকৃতি, মাথার দিকে চিকন, শরীরে ছোপ ছোপ পাতার মত দাগ। | বাংলাদেশর রাজশাহী, কুষ্টিয়া,মানিকগন্জ। তাছারা ভারত, নেপাল শ্রীলংকা ইত্যাদি দেশে দেখা যায়। |
কিং কোবরা বা গোফরা | অনেক লম্বা হয়ে থাকে, মাথায় চশমার মত বলয় রয়েছে এইসব রেগে গেলে ফনা তোলে। | বাংলাদেশ,ভারত,চীন ভুটান নেপাল ইন্দোনেশিয়া থাইল্যান্ড ইত্যাদি। |
সবুজ বোড়া | মাথার অংশ মোটা, গায়ের রং সবুজ | বাংলাদেশ,ভারত,চীন ভুটান নেপাল ইন্দোনেশিয়া থাইল্যান্ড ইত্যাদি। |
কালো নাইজার | শঙ্খিনী জাতের সাপ | বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন চট্টগ্রাম সিলেট নোয়াখালী সুন্দরবন অঞ্চলে দেখা যায়। |
নায়া নায়া | গোফফার মত ফনা তুলে এবং ফনার উপরে দুইটি চশমার মতো দেখা যায়। | বাংলাদেশের পশ্চিমে রাজশাহী অঞ্চলের এইসব বেশি দেখা যায়। |
নায়া কাউচিয়া | শঙ্খিনী জাতের সাপ | বাংলাদেশের সিলেট নোয়াখালী এলাকায় বেশি থাকে। |
রাসেল ভাইপার ও পাইথন চেনার উপায়?
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয়? জানার পাশাপাশি রাসেল ভাইপার ও পাইথন চেনার উপায়? জেনে রাখতে হবে। কারণ আপনার হঠাৎ করে যদি কখনো আপনার সামনে পড়ে থাকে, তাহলে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন এটি কোন সাপ এবং এই সাপটির নাম কি তাই আপনাকে অবশ্যই এই সাপ সম্পর্কে জানতেও চিনতে হবে। তাহলে আমরা জেনে নেই রাসেল ভাইপার ও পাইথন চেনার উপায় সম্পর্কে।
রাসেল ভাইপার মাথার দিকে ত্রিভুজ আকৃতির হয় এবং পাইথনের আরো আয়তাকার হয়ে থাকে রাসেল ভাইপারের শরীরের উপরিভাগ রুক্ষ বালকাময় হয়, কিন্তু অন্যান্য সাপের মসৃণ হয়। গায়ের ছোপ ছোপ দাগগুলো দুটি সাপের অনেকটা ভিন্ন রকম। কিন্তু দুইটি বাদামী রঙের ছাপ এবং দুইটি সাপেরই মাথার দিকে চিকন। রাসেল ভাইপার সাপ অনেকের কাছে চন্দ্রবোড়া নামেও পরিচিত।
রাসেল ভাইপার দেখতে অনেকটা বাদামি রঙের। গায়ে ছোপ ছোপ পাতার মত চিহ্ন রয়েছে। মাথা ত্রিভুজ আকার মুখের দিকে আকৃতি সাদা রেখা রয়েছে। অন্যান্য সাপ মানুষ দেখলে ভয় পায় কিন্তু এইসব মানুষ দেখামাত্রই তেরে আসে কামড়াতে। রাসেল ভাইপার সাপ সরাসরি বাচ্চা দেয় এবং সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৮০ টি বাচ্চা দিয়ে থাকে। বালু খুরে সেখানে সুন্দর ভাবে মিশে থাকে।
মানুষ চলার পথে সহজে বুঝতে পারে না আর মানুষ দেখে মাত্রই অজগর সাপের মত ফুলে ওঠে রাসেল ভাইপার সাপ। কিছুটা অজগর সাপের বাচ্চার মত দেখায়, তবে অজগর সাপের বাচ্চা মনে করে ভুল করবেন কাছে যাওয়া মাত্রই তেরে আসবে কামড় দিতে। মানুষ নিকটে আসলেই জোরে শব্দ করে ওঠে, অনেকটা প্রেসার কুকারের সিটির মতো শব্দ হয়। এই সাপ ব্যাঙ, পোকামাকড়, ছোট পাখি খেতে পছন্দ করে যার জন্য গ্রামাঞ্চলে ধান খেতে এদের বেশি দেখা যায়।
রাসেল ভাইপার সাপ কি
রাসেল ভাইপার সাপ কি এবং রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় জানতে চাচ্ছেন? তাহলে জেনে নিন এই সাপগুলো ভারতের জঙ্গল থেকে বাংলাদেশে বন্যার পানিতে ধেয়ে আসছে এবং বিভিন্ন পদ্মার তীরবর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বেশি দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে প্রায় ৯০ শতাংশ রোগী মারা মারা যাচ্ছে।
রাসেল ভাইপার সাপের দাঁত ১৫ থেকে ১৬ মিলিমিটার পর্যন্ত দৈর্ঘ্য। অন্যান্য সাপ মানুষ দেখলে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে কিন্তু রাসেল সাপ পালিয়ে যায় না। মানুষ কাছে আসলে অজগর সাপের মত ফুলতে থাকে এবং জড়ে জড়ে শব্দ করতে থাকে। এইসব আক্রমণের দিক থেকে প্রথম এবং বিষধর সাপের দিক থেকে অবস্থান পঞ্চম। এই সাপ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপালে প্রায় দেখা যায়।
তবে বাংলাদেশে আগে রাজশাহী অঞ্চলে দেখা যেত কারণ ভারতের কাছাকাছি বরেন্দ্র অঞ্চলের সাপ বলে পরিচিত ছিল। বর্তমানে বন্যার স্রোতে এই সাপ বাংলাদেশের পদ্মা তীরবর্তী অঞ্চল গুলোতে প্রবেশ করেছে এখন প্রায় রাজশাহী ছাড়াও পাবনা কুষ্টিয়া রাজবাড়ী মানিকগঞ্জ এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
রাসেল ভাইপার সাপের এন্টিভেনম
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় জানার পাশাপাশি আরও জানা দরকার এই সাপের এন্টিভেনাম সর্ম্পকে। রাসেল ভাইপার সাপের এন্টিভেনাম হচ্ছে, বিষ নিষ্ক্রিয় করতে একটি উপাদান কে এন্টিভেনাম বলা হয়। রাসেল ভাইপার সাপের কামড় খাওয়ার রোগীর শরীরে দ্রুত ইনজেকশন দিলে বিষ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এই সাপের কামড়ে ক্ষতির দিক বেশি।
রোগীকে দুই ঘণ্টার মধ্যে এন্টিভেনাম ভ্যাকসিন না দিলে রোগী মৃত্যু অনিবার্য বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। তাই প্রতিটা হসপিটালে অ্যান্টিভেনাম ভ্যাকসিন রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এর দংশনের সাথে সাথে হসপিটালে পাঠিয়ে দেবেন।
রাসেল ভাইপার সাপ কত বড় হয়?
রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয় এবং রাসেল ভাইপার সাপ কত বড় হয় জানা দরকার। কারণ এইসব সম্পর্কে না জানা থাকলে অনেকেই দুর্বল সাপ ভেবে সতর্ক নাও হতে পারে তাই সাপের আকার আকৃতি গায়ের রং এইসব কতটা ভয়ংকর সব কিছুই জানতে হবে। কারণ ইতিমধ্যে এই চারিদিকে ভয়াবহ হয়ে গেছে এর রাসেল ভাইপার সাপ। তাই নিজে এবং নিজের কাছের লোকদের সচেতন করুন।
রাসেলস ভাইপার সাপ এর দেহ মোটা, কিন্তু লেজ ও মাথার দিকে শুরু মাথা চ্যাপ্টা ত্রিভুজ আকারের ঠোট ভোতা। রাসেল ভাইপার সাপ সর্বোচ্চ ১৬৬ সেন্টিমিটার (৬৫ ইঞ্চি)। এই সাপের দাঁত প্রায় ১৫ থেকে ১৬ মিলিমিটার হয়ে থাকে। মাথা প্রায় দৈর্ঘ্য ২ কিঞ্চি এবং প্রস্থ ২ ইঞ্চির মত চ্যাপ্টা ত্রিভুজ আকৃতিএবং ঠোঁটের দিকে v আকৃতি।
শেষ কথা
এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলে রাসেল ভাইপার সাপের সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে এবং এই সাপ কতটা ভয়ংকর রাসেল ভাইপার কামড়ালে কি হয়? সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনার আমার সকলের এই সাপ সম্পর্কে জানা উচিত কারণ মানুষ চারিদিকে আতঙ্কে রয়েছে এই সাপের ভয়ে।
আপনার যদি আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুেন এবং নতুন নতুন আপডেট খবর পেতে সাথে থাকুন। এবং আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করে দিবেন যাতে তারা এই সাপ সম্পর্কে সতর্ক হতে পারে।
সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url