ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি? ঈদের দিনে করণীয় ও বর্জনীয় সর্ম্পকে জানুন

ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি? এইসব জানা একজন মুসলমানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুসলমানদের জন্য দুইটি উৎসব আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ উৎসব। তাই আমরা ঈদের দিনের আমল গুলো কি কি এবং ঈদের দিনে করণীয় ও বর্জনীয় ও ঈদের রাতের দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আজকের আর্টিকেলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি
তাছাড়া ঈদের রাতের সাথে আরো কোন কোন রাতগুলো আল্লাহর কাছে প্রিয় এবং এই রাতে আল্লাহ দোয়া কবুল করে নেন এবং এর ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করেছি আপনি এই সব বিষয়গুলো জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে পড়ে আসুন।

ঈদের রাতের দোয়া

আল্লাহ তায়ালা ঈদের রাতের দোয়া কবুল করে নেন। এই রাতে আল্লাহ বান্দাদের খালি হাতে ফিরায় না। বান্দাদের মনের আশা পূর্ণ করে দেন। তাই আমাদের ঈদের রাতের দোয়া এবং ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি তা সম্পর্কে জানা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। একটি বছরে ফজিলতপূর্ণ্য দিন বছরে দুইবার আসে তা হলো ঈদ-উল ফিতর ও ঈদ-উল আযহা। তাই ঈদের রাতে আল্লাহর কাছে দোয়া থেকে বিরত থাকবো না।

ঈদের রাতে চাঁদ দেখা থেকে শুরু করে সারারাত আল্লাহর ইবাদত পালনে মশগুল থাকতে হবে। এ ব্যাপারে হাদিস বর্ণিত আছে, এমন কত গুলো ফজিলতপূর্ণ্য রাতের কথা। হযরত ওমর রাঃ আনহু তিনি বলেছেন, দুনিয়াতে এমন পাঁচটি রাত আছে,যা আল্লাহ এই রাতগুলোতে বান্দাদের ফেরায় না, তাদের দোয়া কবুল করে নেন। আর সেই রাতগুলো হলোঃ-
  • সাপ্তাহিক জুমার রাত;
  • রজব মাসের রাত (১ম রাত);
  • শাবান মাসের রাত (১৫ তারিখ);
  • ঈদুল ফিতরের রাত;
  • ঈদুল আযহার অর্থাৎ কুরবানীর রাত।

ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি

ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি?এ বিষয়ে জানা অবশ্যই একজন মুসলিমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র দিনটিতে আমলের অনেক ফজিলত রয়েছে। আজকের আর্টিকেলে ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি ও কি কি আলোচনা করব। আপনিও যদি জানতে এই বিষয়ে তাহলে আপনি অবশ্যই আর্টিকেলটি সুন্দর করে বুঝে পড়বেন। চলুন ঈদের দিনের সুন্নত সম্পর্কে জেনে নেই।


মুসলিম ধর্মে দুইটি উৎসব পালন করা হয় একটি হল ঈদুল ফিতর অপরটি হল ঈদুল আযহা। দুইটি সব মুসলমানদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই উৎসবে মুসলমানেরা আত্মীয় স্বজনদের সাথে ঈদ করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে চলে আসে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, ঈদ একজন মুসলমানের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আর এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে মুসলিম হিসেবে আমল করাও জরুরী, আর এর ফজিলত অন্যান্য দিনের থেকে অনেক রয়েছে ।
  • ঈদের দিন সকাল বেলা গোসল করিয়ে পাক-পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।
  • আতর সুরমা ব্যবহার করবেন।
  • গোসল শেষে সুন্দর পরিষ্কার উত্তম পোশাক পরিধান করতে হবে।
  • ঈদগাহে যাওয়ার আগে মিষ্টি জাতীয় কিছু খেয়ে যেতে হবে।
  • ঈদগাহে অবশ্যই পায়ে হেঁটে যাওয়ার অনেক সওয়াব রয়েছে।
  • ঈদগাহে তাকবীর বলতে বলতে যাবেন।
  • ঈদের খুতবা মনোযোগ সহকারে শুনবেন।
  • ঈদগাহে এক রাস্তা দিয়ে যাবেন এবং পরবর্তী
  • ঈদের নামাজ শেষ করে অন্য রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরবেন।
  • নামাজ শেষে একে অপরের সাথে কোলাকুলি করা।
  • ঈদে যাওয়ার সময় পাড়া প্রতিবেশীদের ছোট বাচ্চাদের সাথে একসাথে যাবেন।
  • ঈদের দিনে সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন ।
  • ঈদের দিনে পাড়া-প্রতিবেশীদের এবং গরিব আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজ নিবেন। পারলে তাদের সাহায্য করবেন।
  • ঈদুল ফিতরের সময় অবশ্যই ঈদগাহে যাওয়ার আগেই সাদকা পরিশোধ করতে হবে।

ঈদের দিনে করণীয় ও বর্জনীয়

ঈদের দিনের করণীয় ও বর্জনীয়
ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি? ঈদের দিনে করণীয় ও বর্জনীয় কাজগুলো কি কি তা অবশ্যই একজন মুসলমানের জানা দরকার। আপনি যদি একজন মুসলমান হয়ে থাকেন তাহলে আপনারও এইগুলা অবশ্যই জানা দরকার এবং ঈদের দিনে কোন কাজ করা সুন্নত এবং কোন কাজ করা বর্জনীয় তা অবশ্যই জানতে হবে। আর জানতে চাইলে আমাদের আর্টিকেল দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে বুঝে পড়ুন। তাহলে আপনি ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারবেন।

ঈদের দিনে যেসব কাজ করণীয় তা সবগুলোই সুন্নত। ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সুন্নত কাজ গুলো করতে হবে একজন মুসলমানের। ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি এবং কি কি তা অবশ্যই জানতে হবে। আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে এগুলার একটি ছুটে যেতে পারে, তাই অবশ্যই জানা দরকার। আজকের আর্টিকেলের শুরুর দিকে ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি এবং কি কি সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে আলোচনা করেছি আপনি সেখান থেকে পড়ে নিতে পারেন।


এবার আসুন ঈদের দিনের বর্জনীয় কাজগুলো কি কি তা দেখে নেই । এমন কাজ করবেন না যাতে পবিত্র দিনে পাপ হয়। তার জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, আর সতর্ক থাকার জন্য বর্জনীয় কাজগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। আল্লাহ তায়ালা কি কি কাজ বর্জনীয় করে দিয়েছেন আমাদের অবশ্যই জানতে হবে এবং এবং সেই কাজগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে।
  • ঈদের দিনের ফরজ নামাজের পর থেকে ঈদের নামাজের আগ পর্যন্ত অন্য কোন নামাজ নেই।
  • ঈদের দিনে রোজা রাখা যাবে না রাখলে তা হারাম হয়ে যাবে।
  • ঈদের দিনে ঈদের নামাজ বাদ দিয়ে অন্যান্য কাজে মশগুল থাকা যাবে না।
  • ঈদের দিনে হইহুল্লা নাচ গান করা বা অংশগ্রহণ করা এবং কোন রকমের সহযোগিতা করা যাবে না।
  • আগের যুগের মানুষ অনেক কিছু মেনে চলতে গিয়ে বিদআত করে, এ থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
  • ঈদের দিনে আনন্দ ফুর্তি করতে গিয়ে নারীরা বেপর্দায় চলাফেরা করবেন না।
  • ঈদের আনন্দ পালন করতে গিয়ে অমুসলমানদের উপর কোন ভাবে জুলুম করবেন না।

ঈদের দিনের তাকবীর

ঈদের দিনের তাকবীর পাঠ করা সুন্নত। আমাদের নবী করীম সাঃ ঈদের নামাজে যাওয়ার সময় তাকবির বলতে বলতে যেতেন। তাকবীর প্রকাশ্য এবং উচ্চস্বরে করা যায়। বেশি বেশি তাকবীর পাঠ করা সুন্নত।ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি? জানতে চাইলে, তার মধ্যে তাকবীর পাঠ করা একটি সুন্নত। তাকদীর কখন থেকে শুরু হয় এবং কখন শেষ হয় তা আমাদের জানা অবশ্যই দরকার।

ঈদের দিনের তাকবীর পড়বেন, যখন আপনি ঈদগাহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে রওনা দিবেন তখন থেকে তাকবীর পাঠ করতে থাকবেন এবং ঈদগাহে পৌঁছে ইমামের সালাত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত পাঠ করে যাবেন। এতে অনেক ফজিলত রয়েছে।

তাকবীর- “আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার।, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।”

ঈদের দিনের আমল সমূহ

ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি? ঈদের দিনের আমল সমূহ আজকের আর্টিকেলে সুন্দরভাবে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আপনি যদি এই সবগুলো জানতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আর্টিকেলের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বুঝে পড়তে হবে। আমাদের আর্টিকেলের শুরুর দিকে ঈদের সুন্নত আমলসমূহ ধাপে ধাপে তুলে ধরা হয়েছে। আপনি ছেলেগুলো পড়ে আসতে পারেন।

ঈদের দিনের আমল অন্যান্য দিনের থেকে ফজিলতপূর্ণ আমল। আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার হল মুসলমানদের জন্য দুইটি উৎসব। আল্লাহর প্রিয় দিন এই দিন ইবাদতের দিন তাই এই দিনে আমরা কোনভাবেই অবহেলা করব না আল্লাহর ইবাদতে। আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের জন্য দুইটি উৎসব প্রথমটি ঈদুল ফিতর দ্বিতীয়টি ঈদুল আযহা।


ঈদুল ফিতর এর আগের এক মাস রোজা রাখতে হয় আর সেটি হচ্ছে রমজান মাস। আর রমজান মাসের পরের শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ঈদ পালন করা হয়। ঈদুল আযহা জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পালন করা হয় এই ঈদে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কুরবানী করা হয় এবং হজ পালন করা হয়।ঈদুল আযহা যার ওপর কুরবানী করা ফরজ এবং যার উপর হজ পালন করা ফরজ তাদের অবশ্যই এই দুটি পালন করতে হবে এটা আল্লাহর হুকুম।

ঈদের রাতের আমল ও ফজিলত

ঈদের রাতের আমল ও ফজিলত
ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি? ঈদের রাতের আমল ও ফজিলত জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে আমরা আলোচনা করব ঈদের রাতে কি কি কাজ করা আমলের মধ্যে পড়ে এবং এর ফজিলত কি কি এবং কাজগুলো সুন্নত কিনা এসব বিষয়ে জানব। আর আপনি সমস্ত বিষয়ে জানতে এর পুরো থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন।
  • ঈদের চাঁদ দেখা একটি আমল এবং এই কাজটি করা সুন্নত।
  • ঈদের রাতে বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকা নফল ইবাদত করা। এই রাত আল্লাহকে
  • খুশি করানোর রাত তাই বেশি বেশি আমল করুন।
  • যে ব্যক্তি এদের রাতে আল্লাহর ইবাদত করবে তার অন্তর কিয়ামতের দিন মরবে না।
হাদিসে উল্লেখ আছে, আবু উমামা রাদি আল্লাহু তাআলা আনহু হতে বর্ণিত, যে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোন ব্যক্তি দুটি ঈদে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাত জেগে আল্লাহর ইবাদত করে, কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তির অন্তর মরে যাবে না, যেদিন মানুষের অন্তর মরে যাবে ভয়ংকর বিভিষিকাময় পরিস্থিতির কারণে।” (ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ- ১৭৮২)

ঈদুল আযহার অর্থাৎ জিলহজ্ব মাসের একটি অন্যতম দিন হলো আরাফাতের দিন। এই দিনে বেশি বেশি নফল ইবাদত এবং রোজা রাখা ওয়াজিব। আরাফাতের দিন জিলহজ মাসের ৯ তারিখ হয়ে থাকে এবং জিলহজ মাসের ৯, ১১, ১২ তারিখে কুরবানী হয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ঈদের রাতে আমল করার তৌফিক দান করুন।

কোরবানির ঈদ কবে ২০২৪

কোরবানির ঈদ কবে ২০২৪ এ ব্যাপারে মুসলিম ভাইবোনেদের প্রশ্ন। সবার জানার বিষয় এই বছরে কত তারিখে ঈদ পালন হচ্ছে। আরবি মাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সৌদি আরবে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। সেই হিসেবে ইংরেজি মাসের ১৭ তারিখে বাংলাদেশে ঈদ পালন হবে অর্থাৎ জুন মাসের সোমবার কোরবানির ঈদ পালন হতে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ এটি চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে থাকে।

শেষ কথা

এতক্ষন সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সামনে ঈদের রাতের দোয়া সম্পর্কে, ঈদের দিনের সুন্নত কাজ কয়টি? এবং ঈদের রাতের আমল ও ফজিলত ইত্যাদি বিষয় নিয়ে সঠিক তথ্য দেওয়র চেষ্টা করেছি। আপনার যদি আমার এই আর্টিকেল পড়ে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইটে শিক্ষনীয় তথ্য পেতে অবশ্যই ভিজিট করবেন।

আপনাদের কোন বিষয়ে তথ্য জানতে চান তাহলে কমেন্ট বক্সে সেই বিষয়ে কমেন্ট করতে পারেন আমরা তার সঠিক সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করব। আর এইসব শিক্ষনীয় তথ্য যেন আপনার আশেপাশে পরিচিত বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন পড়তে পারে তার জন্য অবশ্যই তাদের সাথে শেয়ার করবেন। তারাও যেন পড়ে একটু হলেও উপকৃত হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url