দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় - মুরগির ভ্যাকসিন দেয়ার নিয়ম
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় যা আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। আপনার খামারের মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ভ্যাকসিন দিতে হবে যাতে করে মুরগি সুস্থ থাকে, দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আপনার মুরগির চুনা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনার খামারের মুরগির সুস্থ সবল রাখতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
আরো আলোচনা করা হয়েছে মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও টিকা দেয়ার নিয়ম, মুরগির বয়স কত হলে টিকা দিতে হয়? মুরগিকে টিকা দিতে হয় এই সব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি আর্টিকেলটি পড়তে চান তাহলে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে পড়ে আসুন বিস্তারিত ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
মুরগির চুনা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় ও দেশি মুরগির চুনা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা আগে বলবো মুরগির চুনা পায়খানা কেন হচ্ছে এবং দেশি মুরগির চুনা পায়খানা দুই রকম হয়ে থাকে। যেমন শক্ত পায়খানার সাথে এবং পাতলা পায়খানার সাথে হয়ে থাকে। ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের অভাবে মুরগির চুনা পায়খানা হয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা দেয় ছোট বাচ্চা মুরগিরও।
বাচ্চা যখন ডিম ফুটে বের হবার সময় বেশি নিয়ে ফেলেছে তার ফলে দেখা যায় কয়েকদিন পরে ওই বাচ্চাটা চুনা পায়খানা হয়েছে। ভিডিওটাও বাচ্চা যখন ঠান্ডা লাগে তখন চুনা পায়খানা হয়ে থাকে। এতে অবশ্যই বাচ্চা খাওয়া কমিয়ে দেবে।
লক্ষণঃ মুরগির যখন এই চুনা পায়খানা রোগ হয় তখন কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমন বাচ্চা মুরগির ক্ষেত্রে ডানা ঝুলে যায়, পা শুকিয়ে যায়, হাঁটা চলা অস্বাভাবিক, গা ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মাথা গুঁজে থাকে, ঝুম মেরে বসে থাকে এই লক্ষণ দেখার পরে খেয়াল করবেন মুরগি চুনা পায়খানা হচ্ছে কিনা অবশ্যই দেখবেন এই মুরগি চুনা পায়খানা করছে।
তাই লক্ষণগুলো অবশ্যই আগে দেখতে হবে। এই লক্ষণ গুলো দেখে যদি আপনি ডাক্তারের কাছে বিস্তারিত বলেন তাহলে ডাক্তার সঠিক ওষুধ দেবে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে। তাছাড়া প্রাকৃতিক ভাবে মুরগিকে আদা খাওয়ালে অনেক উপকার আসে। ঠান্ডা কাশি এগুলো কমিয়ে দেয়। বড় মুরগির ক্ষেত্রে দেখা যায় আপনি সবকিছু নিয়ম করে চলছেন তবুও এ ধরনের চুনা পায়খানা দেখা দেয়।
বিশেষ করে ডিম পাড়া মুরগির ক্ষেত্রে এই রোগটি হয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় আপনি লেয়ার ফিট খাওয়াচ্ছেন তখন মুরগি একটু চুনা পায়খানা হতে পারে সে ক্ষেত্রে আপনি খাওয়ারটা মেনটেন করে খাওয়াতে পারেন। তাহলে চুনা পায়খানা কমে যাবে। আবার অনেক সময় মুরগিকে উল্টাপাল্টা ওষুধ খাওয়ার কারণে চুনা পায়খানা হতে পারে। তাই ভ্যাকসিন দেয়ার সময় আদা পানি খাওয়াতে পারেন।
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয়
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় কি? যে মুরগি সাদা চুনের মত পায়খানা করে সে মুরগি অল্পদিনের মধ্যে মারা যায়। রেনামাইশিন ঔষধ হাঁস, মুরগি, কবুতর, পাখি, খুবই কার্যকরী একটু ওষুধ। এই ওষুধ হাঁস মুরগির বয়স অনুযায়ী খাওয়াতে হয়। যেমন ছোট বাচ্চাদের একসাথে অনেকগুলো বাচ্চার ২০-২৫ টাকা একটি ট্যাবলেট গুলো করে এক লিটার পানির সাথে মিশিয়ে খেতে দিন।
আরও পড়ুনঃ
মুরগির বয়স যখন তিন থেকে চার মাস সে ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১২ টি মুরগির জন্য একটি ট্যাবলেট এক লিটার পানি সঙ্গে মিশিয়ে খেতে দিন। আপনি যদি পাখি জাতীয় যেমন কবুতর ঘুঘু এ জাতীয় পাখিগুলোকে আট দশটি পাখিকে আপনি অর্ধেক ট্যাবলেট গুঁড়ো করে এক লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াবেন।
ট্যাবলেটটি ভাতের সঙ্গে কিংবা ভুসির সাথেও মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। তবে অনেকেই ভাবে অসুস্থ হওয়ার আগেই ট্যাবলেটটি খাওয়াতে চায় কিন্তু এটি কখনোই করা যাবে না যখন হাঁস মুরগি অসুস্থ হয়ে যায় তখন আপনি এই ট্যাবলেট খাওয়াতে পারেন।
দেশি মুরগির ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় ও দেশি মুরগির ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়? জানতে চাচ্ছেন। আজকে আমরা দেশি মুরগির ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা করব। তবে তার আগে জেনে নিন দেশি মুরগির ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবেন কোথায় থেকে বাজারে ফার্মেসিতে মুরগির ভ্যাকসিন ও মুরগির রোগের ঔষধ পাওয়া যায়। আপনি বাজারে গিয়ে মুরগির ভ্যাকসিন এর নাম বললে ফার্মেসি থেকে পেয়ে যাবেন। তবে এগুলো পশুর ডাক্তারের কাছে পাওয়া যাবে এবং পশু হাসপাতালে গেলে মুরগির ভ্যাকসিন পাবেন।
মুরগির ভ্যাকসিন দেয়ার নিয়ম
মুরগির ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম প্রথমে আপনি পানি ২০ মিনিট করে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিবেন। এক মিলিমিটার পানি সিরিজের ভেতরে নিয়ে ভ্যাকসিনের সিসিতে সিরিজটা ঢুকিয়ে দিবেন। এ সময় সিরিজের পানি সিসির ভিতরে একাই চলে যাবে, যদি এটা না যায় তাহলে ভেবে নিতে হবে ভ্যাকসিন টা ভালো নয়। এরপরে সিসিটাকে ঝাকিয়ে নেবেন।
ভ্যাকসিনের সাথে মিসানো পানিটাকে সেই সিরিজের ভেতরে আবার বের করে নিয়ে ফোটন ও পানির মধ্যে মিশিয়ে নিতে হবে। সে ভ্যাকসিন মেশানো পানি বড় মুরগির ক্ষেত্রে এক মিলি করে মুরগির রানের মাংসের ভিতরে দিয়ে দিবেন। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে মুরগির রানের হারে লেগে না যায় ভ্যাকসিন। এভাবেই মুরগিকে রানের মাংসে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।]
দেশি মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা ও টিকা দেওয়ার নিয়ম
ক্রমিক নং উপাদান ওজন
1 ধান ৯ কেজি
2 গম ৯ কেজি
3 ভুট্টা ১৪ কেজি
4 ধানের কুড়া ৪ কেজি
5 ঝিনুক ১ কেজি
6 সয়াবিন মিল ১০ কেজি
7 প্রোটিন ৩ কেজি
সর্বমোট ৫০ কেজি
আপনার খামারের মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ভ্যাকসিন হয়ে থাকে। মুরগিকে টিকা দেওয়ার নিয়ম জানতে হবে। মুরগিকে ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে জানা দরকার একটু ভ্যাকসিনে কতটুকু পরিমান পানি মেশানো যাবে।ছোট বাচ্চা থেকে বড় মুরগিকে কিভাবে বয়স অনুযায়ী টিকা দিতে হয় তা অবশ্যই জানতে হবে।
মুরগিকে কতদিন পরপর টিকা দিতে হয়?
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় দেশি মুরগিকে সাধারণত গ্রাম অঞ্চলে খোলা জায়গায় পালন করে। বর্তমানে অনেক জায়গায় সৌখিন খামারি হিসেবে মুরগিকে আবদ্ধ ভাবে পালন করা হয়। এক্ষেত্রে দেশি মুরগির পালনে ভ্যাকসিন দেওয়া আবশ্যক। এতে মুরগির রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে।
মুরগির বয়স কত হলে টিকা দিতে হয়?
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় ও মুরগির বয়স কত হলে টিকা দিতে হয়? সাধারনত মুরগির বয়স বাচ্চা অবস্থায় ০ থেকে শুরু হয় টিকা দেওয়ার নিয়ম। একদম শূন্য লেভেল থেকে মুরগির বাচ্চাকে টাকা দেয়া হয়ে থাকে এবং কি কি টিকা দেওয়া হয়ে থাকে তা কতদিন পর পর কোন টিকা দিতে হয় তাও দেওয়া রয়েছে আপনি চাইলে এগুলো জেনে নিতে পারেন। বিভিন্ন খাবারগুলিতে প্রতি দুই সপ্তাহ থেকে ৯০ দিনের অব্যাহত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে টিকা দেওয়া হয়ে থাকে।
দেশি মুরগি সাধারণত দেখা যায় গ্রামাঞ্চলে ছেড়ে দিয়ে পুষে কিন্তু এখন বর্তমানে দেশি মুরগিরও খামার রয়েছে। আর খাবার গুলিতে অন্যান্য মুরগির মত দেশি মুরগি কেউ টিকা দেওয়া হয়ে থাকে এবং তাদের অন্যান্য মুরগির মতো খাবার দেওয়া হয় কিন্তু গ্রামাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া মুরগিদের তেমন কোনো পরিচর্যা করা লাগে না।
মুরগির টিকা কখন দিতে হয়?
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় জানার পাশাপাশি মুরগির টিকা কখন দিতে হয় জানতে চাচ্ছেন? সাধারণত মুরগি ডিম পাড়ার সময় হলে কিংবা ডিম পাড়া অবস্থায় মুরগিকে বিকেলের দিকে টিকা দিতে হয়। আপনি আপনি চাইলে অন্যান্য মুরগীদের ক্ষেত্রে সকালে ও বিকালে যেকোনো সময়ে টিকা দিতে পারবেন। তবে টিকা দেওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে ছোট বাচ্চা মুরগি এবং বড় মুরগীদের ক্ষেত্রে।
তার আগে জেনে নিতে হবে টিকা দেওয়ার নিয়মগুলো। মুরগির মুরগির গলার নিচে অর্থাৎ পাখনার উপরে মাংসের ভিতরে কিংবা পায়ে রানের মাংসের ভিতরে পুশ করা হয়।
মুরগিকে কতবার টিকা দিতে হয়?
দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় ও মুরগিকে কতবার টিকা দিতে হয়? জানা অবশ্যই দরকার একজন খামারী ব্যক্তির। মুরগি পালন করতে গেলে প্রতিরোধ সবকিছু বিষয়ে জানতে হবে। মুরগিকে সময়মতো ভ্যাকসিন খাবার, সবকিছু নিয়মিত মানতে হবে। ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
মুরগির টিকা কি নিজে দেওয়া যায়?
মুরগীর টিকা কি নিজে দেওয়া যায়? হ্যাঁ অবশ্যই আপনি নিজেই মুরগির টিকা দিতে পারবেন। তবে নিয়ম গুলো আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয় ও ভ্যাকসিনের সাথে কতটুকু পানি মিস করতে হবে এবং ভ্যাকসিন দেওয়ার সময় মুরগির কোন অংশে দিতে হবে এগুলো বিষয়ে জানতে হবে। এবং কত থেকে কত বয়স মুরগির জন্য কতটুকু পরিমাণ ভ্যাকসিন মিশ্রিত পানি দেওয়া যাবে।
এগুলো জেনে বুঝে আপনি অবশ্যই নিজেই টিকা দিতে পারবেন। আপনার যদি মুরগির খামার থেকে থাকে তাহলে আপনার খাবারের মুরগির নিয়মিত ভ্যাকসিন দিবেন আর চেষ্টা করবেন আপনি আপনার খামারের মুরগিগুলোর নিজেই ভ্যাকসিন দিতে পারবেন।
আজকের শেষ কথা
এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকে আমরা আর্টিকেলে ভিতরে দেশি মুরগির চুনা পায়খানা হলে করণীয়, দেশি মুরগির চুনা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা মুরগির ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনার খামারে মুরগির চুনা পায়খানা দূর করার জন্য আশা করি উপকার হবে আজকের আর্টিকেল।
আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে আপনার পরিচিত খামারি ব্যক্তিদের সঙ্গে শেয়ার করবেন তারা যেন এই সমস্যা থেকে মুরগিকে রক্ষা করতে পারে। এবং মুরগির পালনের এর বিষয়ে আরও তথ্য জানতে চাইলে আমার এই ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।
সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url