আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ - আক্কেল দাঁত ওঠার বয়স

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আপনার আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ সমূহ জানা অবশ্যই দরকার। নিশ্চয়ই আপনার আক্কেল মাড়ির দাঁত এখনো ওঠেনি কিংবা ওঠার বয়স হয়েছে। তাই জানতে চাচ্ছেন আক্কেল দাঁত উঠলে কিভাবে জানবো এবং আক্কেল দাঁত ওঠার বয়স কত? আজকের আর্টিকেলে আমরা এই বিষয় নিয়েই আলোচনা করতে চলেছি।
আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ
আরো আলোচনা করেছি আক্কেল দাঁত ব্যথা কতদিন থাকে, আক্কেল দাঁত কমানোর ঔষধ, এবং ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আপনি যদি আক্কেল দাঁতের ব্যথা উপশম করার জন্য জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য। আপনি সম্পূর্ণ ধৈর্য ধরে পড়ে আসতে পারেন।

ভূমিকা

আমাদের সকলের একটা নির্দিষ্ট বয়সে আক্কেল মাড়ির দাঁত উঠে থাকে। এই দাঁত ওঠার সময় প্রচন্ড ব্যথা মাড়ি ফোলা এবং জ্বর চলে আসে। তার জন্য আগে থেকেই আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ জানতে হবে। তাহলে সহজেই বোঝা সম্ভব আপনার আক্কেল দাঁত উঠেছে। এবং সেই অনুযায়ী দ্রুত ঘরোয়া ও দন্ত চিকিৎসকের দ্বারা চিকিৎসা নিতে হবে। ট্রিটমেন্ট না দিলে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে তাই সচেতন থাকুন আক্কেল মাড়ির দাঁত উঠার সময়।

আক্কেল দাঁত কয়টি

আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ জানার পাশাপাশি আপনাকে জানতে হবে আক্কেল দাঁত কয়টি উঠে এবং কোন বয়সে এইসব বিষয়ে। আপনি আক্কেল দাঁত দেখলে বুঝতেই পারবেন এটি আক্কেল দাঁত। আক্কেল দাঁত থেকে চারকোনা আকৃতির চতুর্ভুজের মতো দেখতে। দাঁতের ভাগ চারটি উপরের মাড়ির দুই ভাগ এবং নিচের মাড়ির দুই ভাগ।মোট ৩২ টি দাঁত রয়েছে।
এখন আক্কেল দাঁত কয়টি তা সহজেই বোঝা যাবে। কারণ চার ভাগের গোড়ার মাড়িতে ৪টি দাঁত রয়েছে। অর্থাৎ মোট আক্কেল দাঁত চারটি উপরের মাড়িতে ২টি এবং নিচের মাড়িতে ২টি।

আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ

আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ জানতে চাচ্ছেন আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখান থেকে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন ইনশাল্লাহ। কালকে দাঁত সবারই উঠে, একটা নির্দিষ্ট বয়সের মধ্যে। এবং তাদের আক্কেল দাঁত উঠে গেছে তারা অবশ্যই এই অভিজ্ঞতা সুন্দরভাবে মনে আছে।
যখন আক্কেল দাঁত উঠে আপনি যদি লক্ষণ গুলো জানেন, তখন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে আপনার আক্কেল দাঁত উঠা শুরু হয়েছে। কিছু লক্ষণ দেখতে পারবেন। দাঁত উঠলেই যে আক্কেল দাঁত বিষয়টা তা নয়। আক্কেল দাঁত উঠার সময় আপনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। যাতে করে  আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার আকেল দাঁত উঠতে চলেছে।

লক্ষণঃ আপনার বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে আক্কেল দাঁত। যে কোন সময় উঠতে পারে। যখন দাঁত উঠার সময় শরীরে জ্বর এবং ব্যথা শুরু হবে এবং এতই তীব্র ব্যথা যে গা হাত পা গলা না কান ব্যথা শুরু হয়ে যায়। আক্কেল দাঁত ওঠা মানে যে আপনার আক্কেল হয়েছে বিষয়টা এমন কোন কিছুই না।

আক্কেল দাঁত ওঠার সময় দাঁত ওঠার যে জায়গাটুকু লাগবে সেই জায়গাটি যদি ছোট হয়, তাহলে দাঁত উঠতে বাধা সৃষ্টি করে। মোট কথা মাড়ি ফুলে যায় এবং তার পাশাপাশি মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় এবং প্রচন্ড ব্যথা হয়, সাথে গলা ব্যথা ও মাথা ব্যথা থাকে,ব্যথায় জ্বর এসে যায়। আর মুখের অন্যান্য দাঁতগুলো ওঠার সময় ব্যথা তেমন হয় না, কিন্তু আক্কেল মাড়ির দাঁত উঠার সময় প্রচন্ড ব্যথা হয় এবং বারবার ব্যথা হয়।

আক্কেল দাঁত ওঠার বয়স

আক্কেল দাঁত ওঠার বয়স
আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ গুলোর মধ্যে জানতে হবে আক্কেল দাঁত ওঠার বয়স কত হতে হয়। তাহলে আপনি ধারণা করতে পারবেন আপনার এই বয়সে দাঁতের ব্যথা এবং আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ গুলো দেখা দিচ্ছে। আপনার দাঁত উঠার সময় যে ব্যথা সৃষ্টি হয়, জ্বর হয়, এবং পাশাপাশি দাঁতের মাড়ি ফুলে যায় তখন লক্ষ্য করবেন আপনার বয়স কত হয়েছে।

আক্কেল দাঁত উঠার সমস্যা একটু প্রচলিত বিষয়। সময়মতো দাঁতের চিকিৎসা না করালে মারাত্মক ব্যথা সৃষ্টি হবে। দাঁত ওঠার বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে দাঁত উঠে যায় তবে কারো কারো ক্ষেত্রে ২৮ বছরের লেগে যায়। আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ দেখা দিলেই ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে তাহলে এত ব্যথা হতে হবে না।

আক্কেল দাঁত উঠলে কি হয়

আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ জানা থাকলে বুঝতে পারবেন, আপনার এই সময় আক্কেল দাঁত উঠতে চলেছে। আক্কেল দাঁত উঠলে কি হয়? এই বিষয়টি অনেকেই জানেনা তবে আজকে জেনে নিন আপনার যদি আক্কেল দাঁত না ওঠে থাকে কিংবা ওঠার বয়স হয়েছে যে কোন সময় উঠতে পারে এই সময়ে আপনি আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ গুলো জানতে পারেন।

আক্কেল দাঁত উঠলে আপনার শরীরে জ্বর চলে আসবে ব্যথায় কাতর হয়ে যাবেন। পাশাপাশি গলা ব্যথা মাথা ব্যথা কান ব্যথা শুরু হবে। এই সময়ে মুখ হা করে কিছু খাওয়া যায় না। এই সময় আপনাকে দন্ত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিতে হবে। তাহলে আপনার আক্কেল দাঁত উঠার সময় এত কষ্ট হবে না, ব্যথা পোহাতে হবে না।

আক্কেল দাঁত ব্যথা কতদিন থাকে

আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ গুলোর মধ্যে আপনি দেখতে পারবেন এই সময়ে আপনার ব্যথা কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী আছে। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক বয়সে সময় এই দাঁত গজাতে থাকে। এটি সবারই উঠে।আক্কেল দাঁত মাড়ির তলা থেকে উঠে থাকে। মাড়ির মাংস কেটে দাঁত বের হয়। এমনকি বাঁকা হয়ে দাঁত উঠলে ব্যথা আরো তীব্র হয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে আক্কেল দাঁত ব্যথা কতদিন থাকে প্রায় এক সপ্তার মত দাঁত ব্যথায় ভুগতে হয়। তবে চিকিৎসা নিলে অল্প তাড়াতাড়ি ব্যথা কমে যায় এবং দ্রুত স্বস্তি পায়।

আক্কেল দাঁত ব্যথা কমানোর ওষুধ

আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ দেখা দিলে আপনি দন্ত চিকিৎসকের কাছে যাবেন, সেখানে আপনি ট্রিটমেন্ট নেবেন। ব্যথা উপশম করার জন্য ফ্লুব্লাস্ট ট্যাবলেট (Flublast tablet) ব্যবহার করতে পারেন। এই ট্যাবলেটটি যেকোনো ব্যথা শারীরিক ব্যাথা দাঁত ব্যথা মাথা ব্যথা কমিয়ে দেয়। ফ্লুব্লাস্ট ট্যাবলেট একটি কার্যকারী ঔষধ।

আক্কেল দাঁত ব্যথা কমানোর হোমিও ঔষধ

আক্কেল দাঁত ব্যথা কমানোর হোমিও ঔষধ
আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ দেখা দিলে আপনি আক্কেল দাঁত ব্যথা কমানোর হোমিও ঔষধ সেবন করতে পারেন। এ সময় দাঁত ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো তীব্র ব্যাথা শুরু হয় যা অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। এ সময় মুখ হাঁ করানো কষ্ট হয় ফলে দাতের বাড়িতে ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে। তাই দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।

এখন আপনি চিন্তা করছেন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সেবন করবেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। হোমিওপ্যাথিক ঔষধধীরে ধীরে কাজ করলেও এতে কোন সাইড ইফেক্ট পড়ে না। কিন্তু আপনাকে ডোজ পূরণ করে খেতে হবেসম্পূর্ণ করতে হবে। কয়েকটি হোমিওপ্যাথিক ওষুধের নাম উল্লেখ করছি। যেমন-

হেক্লা লাভাঃ আক্কেল দাঁত উঠার সময় দাঁতের মাড়ি ব্যথা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চোয়াল ফুলে যায় এক্ষেত্রে আপনি হেক্লা লাভা ওষুধ খেলে ব্যথা প্রশমিত হবে।

ক্যামোমিলাঃ ব্যথার কারণে শিরশিরানি অনুভূতি হয়।এক্ষেত্রে আপনি ক্যামোমিলা ঔষধ খাবেন।

মার্ক সলঃ দন্তশূলের সাথে সাথে লালা স্রাব এবং দুর্গন্ধযুক্ত মুখ অথবা বাড়ির রক্তক্ষরণ দাঁতের গোড়া আলগা হওয়া থেকে রক্ষা করে। এই ওষুধটি খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ।

আর্নিকাঃ আক্কেল দাঁত উঠার ও দাঁত তোলা বা ফিলিং করার কারণে প্রচন্ড ব্যথা হতে হতে।এক্ষেত্রে আপনি আর্নিকা ব্যবহার করতে পারেন। আর্নিকা ওষুধ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

প্ল্যান্টাগোঃ হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মধ্যে ব্যথার জন্য এই ওষুধটি খুবই কার্যকরী। দাঁতের অসহ্য ব্যথা উপশম করতে ভালো কাজ করে।

আক্কেল দাঁত ব্যথা কমানোর উপায়

আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই আক্কেল দাঁত ব্যথা কমানোর উপায় অবলম্বন করতে হবে। কারণ সঙ্গে সঙ্গে ট্রিটমেন্ট না দিলে ব্যথা বেড়ে যাবে। আপনি যত দ্রুত সম্ভব দন্ত ডাক্তারের চিকিৎসা নিবেন। এই সময় কোন অবহেলা করা যাবে না কারণ আপনার দাঁতের মাড়িতে ব্যাকটেরিয়া ধরতে পারে।

এতে করে মারাত্মক হয়ে যেতে পারে তাই দন্ত ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে পাশাপাশি ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসা দিতে হবে। অনেক সময় মাড়িতে অস্ত্র চালাতে হতে পারে।

আক্কেল দাঁতের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া পদ্ধতি

আপনার যদি আক্কেল দাঁত উঠার লক্ষণগুলো জানা থাকে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন এই সময় আপনার আক্কের দাঁত উঠতে চলেছে এবং ব্যথা কমাতে আপনি সঙ্গে সঙ্গে ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনার যে ব্যথা সৃষ্টি হবে, তা থেকে অনেকটা মুক্ত পাবেন। আসুন জেনে নেই কিভাবে সেই ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার আক্কেল দাঁত ওঠার ব্যথা কমাবেন।

কুসুম লবণ পানিঃ ব্যথা কুসুম কমাতে লবণ পানি ব্যবহার করতে পারেন। আপনাকে কুসুম গরম পানির মধ্যে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করতে হবে। এতে করে দাঁতের ভিতরে ব্যাকটেরিয়া দূর হবে ব্যথা কমে যাবে সাথে ফোলাও কমে যাবে।

লবঙ্গঃ আক্কেল দাঁত ওঠার সময় যে ব্যথা হয় তা প্রচন্ড। আপনি এই সময় যেই মারি থেকে দাঁত বের হচ্ছে সেখানে একটি লবঙ্গ রেখে দুই মাড়ি দিয়ে চেপে ধরতে পারেন। মাড়ির ব্যাকটেরিয়া দূর হবে সাথে ব্যথা কমে যাবে। আপনি চাইলে লবঙ্গ গুড়া করেও মাড়িতে লাগাতে পারেন।

ভাতের গরম ছেকঃ এ সময় আপনার গলা ব্যথা হবে প্রচুর পরিমাণ যা আপনি ঢোক চিপতে পারবেন না। এখন আপনার করণীয় আপনি একটি নরম কাপড়ে গরম ভাত নিয়ে সেটা মুড়িয়ে হালকা কুসুম গরম অবস্থায় গলাতে ব্যাথার স্থানে চেপে ধরতে পারেন এতে করে অনেকটা ব্যথা কম হবে।

আজকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমরা আজকে আর্টিকেলের মধ্যে জানতে পারলাম, আক্কেল দাঁত ওঠার লক্ষণ সমূহ এবং আক্কেল দাঁত ওঠার বয়স সহ ব্যথা কমানোর উপায় বিস্তারিত। আশা করি এই আর্টিকেল থেকে আপনার আক্কেল মাড়ির দাঁত ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।

এই আর্টিকেলটি পরে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার পরিচিত যাদের আক্কেল মাড়ির দাঁত এখনো ওঠেনি, কিংবা দাঁত ওঠার বয়স হয়েছে এমন ব্যক্তিদের কাছে শেয়ার করতে পারেন। তারাও যেন আর্টিকেলটি পড়ে আগে থেকে সতর্ক হতে পারে। আর এ ধরনের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেতে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন তাহলে সবার আগে আপনি জানতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url