ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ কি জানুন

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ আমাদের এখনো জানা খুবই দরকার। কারণ এখন চারিদিকে এই ভাইরাস জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। তার জন্য আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার ভাইরা জ্বর হয়েছে তাই লক্ষণগুলো আপনাকে অবশ্যই জানা দরকার। আপনার শরীরে ১০২ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয় কি এবং কি করবেন? সেসব বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে।
ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ ও প্রতিকার
আরোও আলোচনা করা হয়েছে জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়, ভাইরাস জ্বর কতদিন থাকে, দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়, টাইফয়েডের লক্ষণ, শরীরে হালকা জ্বর কেন হয় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আপনি যদি জ্বরের বিষয়ে জানতে চান’ তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য।

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ কিভাবে বুঝবেন? অনেক সময় ঋতু পরিবর্তন এর ফলে ঘরে ঘরে জ্বর হয়ে থাকে। এই সময়গুলোতে ভাইরাস জ্বর হয়ে থাকে। ইতিমধ্যে চারিপাশের মানুষের ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। এই জ্বর একটানা এক সপ্তাহ এবং তার বেশি সময় ধরে থাকছে। ভাইরাস জ্বরের কিছু লক্ষণ রয়েছে। অনেকেই বাইরে জ্বরের লক্ষণগুলো বুঝতে পারি না।

স্বাভাবিক জ্বরের থেকে ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ অনেকটা ভিন্ন তাই আমাদের ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ গুলো কি কি সেই বিষয়ে জানা অবশ্যই দরকার। কারণ ঋতু পরিবর্তন এসেছে মানুষের শরীরে তাপমাত্রা ওপর প্রভাব পড়ে। অনেক সময় ঘরে ঘরে জ্বরের ছড়াছড়ি। এই সময় একটি বাড়িতে প্রায় সকলেরই একে একে জ্বর হয়ে থাকে। আসুন আমরা জেনে নেই ভাইরাস জ্বরের লক্ষণগুলো কি কি?

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণঃ
  • ভাইরাস জ্বর প্রথম দিকে হঠাৎ করে স্বাভাবিক জ্বরের মতো চলে আসে। স্বাভাবিক জ্বরে প্রথম থেকে হালকা হালকা একটু একটু করে জ্বর হয়, কিন্তু ভাইরাস জ্বর হঠাৎ করে গায়ে অনেক জ্বর চলে আসে।
  • প্রথমের দিকেই জ্বর ১০২/ ১০৩ এর উপরে থাকে। এরপর গা ব্যথা শুরু হয়। শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা শুরু হয়।
  • অনেক সময় চোখ জ্বালাপোড়া করে। স্বাভাবিক জ্বর আসলে আমরা প্রথমে প্যারাসিটামল খেয়ে থাকি এতে করে জ্বর কমে যায় কিন্তু ভাইরাস জ্বর প্যারাসিটামল খেয়েও জ্বর কমে না প্রথম অবস্থায় থেকে জ্বর অতিরিক্ত কাঁপুনি উঠে যায় ।
  • বমি বমি ভাব আসে। জটিল ভাইরাস জ্বর অনেক রোগীর বমি বমি ভাব হয়। অনেকের ক্ষেত্রে রোগী কিছু খেতে পারেনা।
  • জ্বর আসা মাত্রই মাথা ব্যথা শুরু হয়। ভাইরাস জ্বরে মাথাব্যথা করতে পারে। অনেক সময় সর্দি ভাব আসে খুশখুশ কাশি হতে পারে। সারা শরীর প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করে। শীত শীত অনুভব হয় এরপর একটু ঘাম ঝরে আবার জ্বর আসা।

১০২ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয়

ভাইরাস জ্বরেরলক্ষণ সমূহ মধ্যে জ্বর অতিরিক্ত চলে আসে। ১০০ উপরে জ্বর চলে আসে  এক্ষেত্রে ১০২ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয় কি? আমরা সাধারণত জানি জ্বর অতিরিক্ত হলে গামছা বা নরম কাপড় ভিজিয়ে গা মুছে দিতে হবে এবং কপালে পাতলা কাপড় ভিজিয়ে কপালে রেখে দিতে হবে আর কিছুক্ষণ পর পর আবার কাপড় ধুয়ে আবারো কপালে দিতে হবে।

১০০ এর বেশি ১০২ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয় হল আপনাকে প্রথমে বেশি বেশি ভেজা গামছা দিয়ে গা মুছে দিতে হবে। মাথায় পানি ঢালতে হবে এবং না কমলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এবং জ্বরের সঙ্গে শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি হওয়া ইত্যাদি হয়ে থাকলে পরামর্শ নিতে হবে এবং রোগীকে বিশ্রামে থাকতে হবে।

দ্রুত জ্বর কমতে গরম পানিতে ভেজা গামছা দিয়ে সারা শরীর মুছে দিতে হবে। ব্যথা করতে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়ান। ব্যথা, জ্বর যদি না করে তাহলে প্যারাসিটামল সাপোজিটর দিতে হবে। জ্বর কমতে উপকার করে আনারস তাছাড়া টক জাতীয় ফল বেশি বেশি খেতে হবে যেমন জাম্বুরা, আমরা, কমলা, লেব, ইত্যাদি ফল।

জ্বর তিন দিনের মধ্যে ভালো না হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। বিশেষ করে বমি, পাতলা পায়খানা, শ্বাসকষ্ট হলে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। ব্যাটারি পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দিন।

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
ভাইরাস জ্বরের লক্ষণসমূহ জানতে হবে আপনি তাহলে বুঝতে পারবেন এই জ্বর আসলে ভাইরাস কিনা নাকি স্বাভাবিক জ্বর। আপনি যদি জেনে থাকেন ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ তাহলে আপনার চিকিৎসা করতে সুবিধা হবে। এবং জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন এতে রোগী অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠবে।

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় অতিরিক্ত জ্বর হলে রোগীকে কপাল ও ঘাড়ে জলপট্টি দিতে পারেন। এই জলপট্টি অনেক উপকার করে। জ্বর বেশি থাকলে গোসল না দিয়ে কুসুম গরম বাড়িতে গামছা ভিজিয়ে গা মুছে দিতে হবে। অতিরিক্ত জ্বর মাথায় উঠলে পানি ঢালতে হবে।তরল খাবার খাওয়াতে হবে। জ্বর হলে শরীরের অ্যান্টিবডি দুর্বল হয়ে যায়।

ভাইরাস জ্বর কমানোর উপায়

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ জানতে হবে। কি কি কারনে ভাইরাস রোগ হয়ে থাকে তা থেকে সতর্ক থাকতে হবে। ভাইরাস জ্বর প্রথম দিক অনেক বেশি থাকে। ওষুধ খাওয়ালে কিছুক্ষণের জন্য জ্বর উঠে যায় আবার বেশি হয়। ভাইরাস জ্বর কমানোর উপায় রোগীকে ঘরোয়া পদ্ধতিতে সেবা দিতে হবে পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।
  • মনে রাখতে হবে ওষুধ ডোজ পূরণ করে খেতে হবে। ডোজ পূরণ করে না খেলে কিছুদিন পরে আবারো জ্বর আসতে পারে তাই অবশ্যই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
  • ভাইরাস দূর করানোর জন্য আপনি চাইলে মধু ও লেবু রস এক গ্লাস সামান্য কুসুম গরম পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হবে। এতে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
  • আদা বাটা, লেবু রস ও মধু মিশ্রণ করে। কিছুক্ষণ পর পর খেতে হবে আশা করি এতে ভালো উপকার পাবেন।
  • কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে।, জ্বর হলে শীত অনুভূতি হয় তাই কখনো ১০০ ডিগ্রিতে আসলেও কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করাবেন।এতে জ্বর কিছুটা কমবে।

ভাইরাস জ্বর কত দিন থাকে

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ কি কি জানার পাশাপাশি ভাইরাস জ্বর কতদিন থাকে এটি জানাও জরুরী। এটি একটি লক্ষণের মধ্যে পড়ে। জ্বর ৭ দিনের উপরে গেলে ধরে নিতে হবে এটি ভাইরাস জনিত জ্বর এই জ্বর ৭ থেকে ১৪ দিন স্থায়ী হতে পারে। অবশ্যই ওষুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এই ঝড়ের প্রধান উপসর্গ হচ্ছে শরীর ব্যথা রয়েছে, অরুচি ভাব, সর্দি-কাশি হয়ে থাকে।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার
ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ এর মধ্যে টাইফয়েড একটি ভাইরাস। টাইফয়েড হয়ে থাকে দূষিত খাবার বা দূষিত পানি এর মধ্যে। বর্তমান টাইফয়েড জ্বর সাধারণ একটি রোগ। এই রোগ ব্যাকটেরিয়া নামক সংক্রমণ হয়েছে। দূষিত খাবার বা পানির মধ্যমে দেহে জীবাণু ছড়ায় এই জ্বর ছাড়াও নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।

টাইফয়েড দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি টাইফয়েড ও একটি প্যারা টাইফয়েড। টাইফয়েডের ঝুঁকি বেশিরভাগ শিশুদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে সংক্রমণ করতে পারে না।

দ্রুত জ্বর কমানোর উপায়

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ জেনে দ্রুত জ্বর কমানোর উপায় অবলম্বন করতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য ঔষধের পাশাপাশি ঘরোয়া ভাবে সেবা দিতে হবে। যে কোন রোগের ক্ষেত্রে শুধু ওষুধে ভালো হয় না তার সাথে সেবা অবশ্যই দরকার। আপনি যদি দ্রুত জ্বর কমাতে চান, তাহলে জ্বর কমানোর উপায় অবলম্বন করতে হবে। আসুন তা জেনে নেই-
  • জ্বরে অতিরিক্ত গা গরম হলে দিয়ে ভেজা গামছা বা তোয়ালে দিয়ে গা মুছ করতে হবে।
  • মাথায় পানি ঢালতে হবে।
  • সর্দি কাশি জ্বর কমাতে তুলসী পাতার রস খুবই উপকারী।
  • মধু ও লেবুর রস মিশ্রণ করে খানিক টুকু কুসুম গরম পানির সাথে খেলে অনেক উপকার আসে।
  • জ্বর কমাতে আদার রস ও মধুর মিশ্রণ করে খেতে পারেন।
  • কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল কিংবা গা মুছতে হবে।
  • জ্বর হলে বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন এতে করে জ্বর অনেকটা কমে আসবে।

বার বার জ্বর হলে করণীয়

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ জানার পাশাপাশি বারবার জ্বর হলে করণীয় কি এই বিষয়ে জানা দরকার। বার বার জ্বর আসার কারণ অনেক সময় যার ছুটে ছুটে আসে। প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে। জ্বর হলে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। শরীরে জ্বর যত বেশি হয়, শরীরে ততই ডি- হাইড্রেশন বাড়ে। জ্বর হলে টক জাতীয় ফল খেতে হবে। ভিটামিন এর ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

শরীরে হালকা জ্বর কেন হয়

ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ সমূহ যেন অবশ্যই জরুরী কারণ আপনার জ্বর স্বাভাবিক কিনা ভাইরাস হয়েছে, আপনি বুঝবেন কিভাবে তার জন্য কি কি লক্ষণ রয়েছে। এগুলো অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে তার পাশাপাশি শরীরে হালকা জ্বর কেন হয় সেই বিষয়ে জেনে নিন। আজকের আর্টিকেলে জ্বর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি চাইলে পুরোটুকু পড়ে আসতে পারেন।

জ্বর একটি সাধারণ বিষয় কিন্তু এই জ্বর যদি ভাইরাস হয় তাহলে এটি মারাত্মক জ্বর শরীরে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে। ভাইরাসের আক্রমণ হলে অর্থাৎ ইনফেকশন হলে জ্বর হতে পারে। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। শরীরে হালকা হালকা জ্বর, ছুটে ছুটে জ্বর আসার লক্ষণ ভালো নয় এর থেকে টাইফয়েড হয়ে যেতে পারে।

আজকের শেষ কথা

এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বর্তমানে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে তাপমাত্রার সাথে খাপ খাওয়াতে পারে না, যার কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবে এই সময় জ্বর সর্দি কাশি হয়ে থাকে আবার অনেক সময় এই জ্বর ভাইরাস হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। বাইরে জ্বরের লক্ষণ সমূহ ও জ্বর অতিরিক্ত হলে অর্থাৎ ১০২ ডিগ্রী জ্বর হলে করণীয় কি এসব বিষয়ে আপনি যে জানতে পেরেছেন।

লেখাটি পড়ে আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন তারাও যেন পড়ে উপকৃত হয়। কারণ চারিদিকে এই ভাইরাস জ্বরে মানুষ আতঙ্ক হয়ে আছে। আর আপনি নতুন নতুন খবর পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আমরা নিয়মিত এই ওয়েবসাইটে নতুন তথ্য লিখে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url