লিভার জন্ডিসের লক্ষণ - লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয় বিস্তারিত জানুন

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, আমাদের সকলের জন্ডিসের থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লিভার জন্ডিসের লক্ষণ এবং লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয় জানা দরকার। বিলিরুবিনের মাত্রা কত হলে জন্ডিস হয় তা জানা দরকার।
লিভার জন্ডিসের লক্ষণ ও জন্ডিস হলে কি করনীয় বিস্তারিত জানুন
আরোও বিস্তারিত ভাবে ঘরোয়া ভাবে জন্ডিস কমানোর উপায়,জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয় এবং লিভার জন্ডিস কেন হয় এসব বিষয়গুলো বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি জন্ডিস এর হাত থেকে বাঁচতে চান তাহলে এর লক্ষণ প্রতিকার অবশ্যই জানা দরকার। জানতে হলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ বুঝে পড়ে আসতে পারেন।

ভূমিকা

জন্ডিস একটি পানি বাহিত রোগ। যা ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। জন্ডিসের লক্ষণ গুলো দেখামাত্রই দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরী। কেননা আরো বড় বড় ধরনের রোগ হতে পারে লিভারে পানি ধরতে পারে। বিনিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে জন্ডিস এর লক্ষণ দেখা দেয়।

বিলিরুবিনের মাত্রা কত হলে জন্ডিস হয়

লিভার জন্ডিসের লক্ষণ রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা 0.3 থেকে 1.2 mg/dlএর মধ্যে থাকে। আপনার রক্ত যদি এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে তার জন্ডিস নেই। এর থেকে বেশি হলে আপনার জন্ডিস রয়েছে আশঙ্কা করা যায়। স্বাভাবিক মাত্রা 1.0 mg/dl এর মধ্যে হলেই হবে। জন্ডিসের কারণ সামান্য থেকেই মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায়।

লিভার জন্ডিসের লক্ষণ

শরীরের লোহিত কণিকা ভেঙ্গে গিয়ে তৈরি হয় বিলিরুবিন। বিলিরুবিন সকলের শরীরে থাকে যখন এর মাত্রা বেশি হয়ে যায়, তখনই জন্ডিস রোগ হয়ে থাকে। তবে বিলিরুবিনের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় যা লিভার জন্ডিসের লক্ষণ গুলো জানা অত্যন্ত জরুরি। আপনি যদি লক্ষণগুলো না জানতে পারেন, তাহলে তো বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যাব।
লিভার জন্ডিসের লক্ষণ জানতে হবে আপনার শরীরে কি কি সমস্যা হলে আপনার জন্ডিস হয়েছে বুঝতে পারবেন। তাই সবার আগে জন্ডিসের লক্ষণগুলো জেনে রাখা উচিত। তা না হলে আপনি বুঝতে পারবেন না আপনার জন্ডিস হয়েছে হয়তো এক সময় অতিরিক্ত হয়ে গেলে তখন আপনার সমস্যা ধরতে পারবেন, কিন্তু জন্ডিস হয়েছে কিনাবুঝতে পারবেন না।
তাই অল্প থাকতে আপনারা রোগের লক্ষণগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন এবং লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয়? দ্রুত চিকিৎসা নিতে পারবেন। নিচের লিভার জন্ডিসের লক্ষণ গুলো দেওয়া রয়েছে। আপনি যদি লক্ষণগুলো না জেনে থাকেন তাহলে জেনে নিন কি কি সমস্যা হতে পারে তাহলে আপনার পক্ষে সুবিধা হবে জন্ডিস রোগ ধরার।
  • বমি বমি ভাব হাওয়া।
  • জ্বর জ্বর ভাব হাওয়া। কখনো ঠান্ডা কখনো গরম মনে হয় শরীরের ভিতরে।
  • অল্পতেই ক্লান্তি ভাব চলে আসে।
  • পেট ব্যথা হয়ে থাকে কখনো বেশি আবার কখনো কম হয়।
  • ক্ষুধা ভাব কমে যায়, খাওয়ার প্রতি অনিয়া জাগে।
  • খাবারে গন্ধ যুক্ত মনে হয়।
  • প্রসাব হলুদ হয়ে যায়।
  • মাঝে মাঝে জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে।
  • চোখ হলুদ হয়ে যায়।হাত মুখ হাতের আঙ্গুল হলুদ ফ্যাকাসে হতে থাকে।

লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয়

লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয় এগুলো জানা দরকার কারণ জন্ডিস অবহেলা করলে শরীরের বড় বড় সমস্যা হতে পারে। তাই জন্ডিস রোগ পুষে রাখা যাবে না। জন্ডিসের লক্ষণ গুলো দেখা দেয়া মাত্রই দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রচলিত সমাজে কবিরাজ হারবাল অথবা ঝাড়ফুক এর মাধ্যমে চিকিৎসা করে থাকে। এইসব কারণে সমস্যা আরো বেড়ে যায়।
লিভার জন্ডিসের লক্ষণ গুলো দেখা মাত্রই ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে হবে। প্রচলিত সমাজে জন্ডিস কথা শোনা মাত্রই কবিরা যে কাছে চলে যায় এবং হারবাল ওষুধ নিয়ে চলে আসে। এইসব করা মোটেই উচিত হবে না ডাক্তারের কাছে যাবেন এবং সঠিক চিকিৎসা নিবেন। অল্পতে দ্রুত জন্ডিস ভালো হয়ে যাবে। তাই অযথা সময় নষ্ট করবেন না ঝাড়ফুঁক দিয়ে।

ঘরোয়া ভাবে জন্ডিস কমানোর উপায়

ঘরোয়া ভাবে জন্ডিস কমানোর উপায়
লিভার জন্ডিসের লক্ষণ জানার পরে লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয় এখন আপনি কিভাবে জন্ডিস কমানোর উপায় জানবেন। আপনাকে জানতে হবে কোন খাবারে এবং কিভাবে চলাচল করলে জন্ডিসের রোগ কমে যাবে। জন্ডিস কমানোর উপায় কয়েকটি ধরনের দেখা যায়।

আড়লের পাতার রসঃ জন্ডিস হলে আরল গাছের পাতা রস করে খেতে পারেন।

ডাবের পানিঃ ডাবের পানি জন্ডিস কমাতে খুবই উপকারী তাছাড়াও বিশুদ্ধ পানি জন্ডিসের হাত থেকে কমায়।

বিশুদ্ধ পানিঃবেশি বেশি পানি পান করতে হবে আর তা হতে হবে বিশুদ্ধ পানি। পান করতে হবে।

শারীরিক সম্পর্কঃ অনিরাপদ নিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে হবে।

মদ্যপানঃ অবশ্যই মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। আরো বড় বড় রোগের বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে মদপান্য করা কোন ধরনের নিষাযুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা।

কফি বা গ্রিন টি খানঃ সকাল সন্ধ্যায় হালকা নাস্তার মধ্যে কফি বা গ্রিন টি রাখতে হবে এটি খেলে লিভারের সমস্যা দূর হয়। এবং তাছাড়াও আপনি হারবালটি পান করলেও অনেকটা সমস্যা সমাধান হয়।

আমের কচি পাতার রসঃ প্রতিদিন সকালে আপনি আমের কচি পাতার রস করে খেতে পারেন। এতে জন্ডিস কমে যাবে।

আখের রসঃ আখের রস খেলে জন্ডিস অনেকটা নিরাময় হয় পাশাপাশি লেবু কমলালেবু খেতে পারেন।

ধনে গোটাঃ গোটা ধনে রাতে একটি গ্লাসে পানির মধ্যে ভিজে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খেতে পারেন এতে অনেক উপকার পাওয়া যাবে জন্ডিসের জন্য।

লিভার জন্ডিস কেন হয়

লিভার জন্ডিস কেন হয়
লিভার জন্ডিস কেন হয় ও লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয়? লিভার শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। যা যা এই অঙ্গটি শরীরকে শক্তি উৎপাদনের জন্য ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও লিভার শরীর থেকে শরীরের ময়লা আবর্জনা ক্ষতিকর পদার্থগুলো বের করে দেয়। আর যখন লিভারের এই কাজ করা বন্ধ করে দেয় তখনই শরীরের জমতে থাকে বিলিরুবিনের মাত্রা স্বাভাবিক এসে বেড়ে গেলে তখনই জন্ডিস হয়ে থাকে।
যকৃতের প্রদাহ, পিত্তনালির পথে ব্লক বাধা সৃষ্টি করে ও হিমোলাইসিস অথবা সময়ের আগেই রক্তের লোহিত কণিকা ভেঙ্গে যায়। এই তিনটি কারণেই মূলত জন্ডিস দেখা দেয়। বিভিন্ন সংক্রমণ এর কারণে জন্ডিস হয়ে থাকে। যেমন হেপাটাইটিস এ ও ই এবং বি সি ও ডি দূষিত রক্ত এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়ায়।

জন্ডিসের কারণ ও লক্ষণ

লিভার জন্ডিসের লক্ষণ কি? ও জন্ডিসের কারণ ও লক্ষণ, লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয় গুলো জানা প্রয়োজন। জন্ডিস একটি পানিবাহিত রোগ। তাই এটি ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। হেপাটাইটিস বি ও হেপাটাইটিস সি এই দুটি রোগ ছড়াতে পারে বিভিন্ন কারণে। যেমন বিভিন্ন কারনে অনিরাপ্রধানিত রক্ত পুশ করা, ভাইরাস সংক্রমিত মায়ের থেকে সন্তানের জন্ডিস হয়ে থাকে। সিরিঞ্জ এর মাধ্যমে হয় যেমন জন্ডিস আক্রান্ত রোগীর ব্যবহার করলে। মাদকদ্রব্য মাধ্যমে গ্রহণ করলে।
সাধারণত জন্ডিস হলে চোখের সাদা অংশ ও প্রসাব হলুদ হয়। হেপাটাইটিসের পাশাপাশি ক্ষুধামন্দা, মুখে অরুচি ভাব বমি বমি ভাব, এবং জ্বর জ্বর অনুভূতি দিয়ে জ্বর আসা মাঝেমাঝে পেটে ব্যথা হয়। আর বড় কথা হচ্ছে আপনি কিছু খেতে গেলেই আসতে গন্ধ লেগে থাকে এইসব লক্ষণগুলো দেখা দিলে আপনি ভাববেন যে আপনার জন্ডিস হয়েছে।

জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয়

জন্ডিস হলে কি কি সমস্যা হয় এবং লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয় তা উপরের অংশে আলোচনা করা রয়েছে। তবে জন্ডিসের সমস্যাগুলো প্রথম অবস্থায় সহজে ধরে নাও করতে পারে আবার বেশি বেশি পানি খাওয়ার পরে অল্পতেই সেরে যেতে পারে। তাই বেশি বেশি পানি খেতে হবে। আবার জ্বর জ্বর ভাব চলে আসে। কখনো মনে হয় গায়ে জ্বর রয়েছে আবার কখনো মনে হয় ক্লান্তি। কোন কাজকামের শান্তি পাওয়া যায় না।
খাওয়া-দাওয়া সমস্যা হয়ে থাকে। খাওয়া-দাওয়া কমে যায় খিদে ভাব থাকে না। এবং খেতে গেলে গন্ধ লাগে। বিশেষ করে আশঁ যুক্ত খাবার খেতে পারে না যেমন মাছ, ডিম,দুধ এগুলোতে প্রচুর পরিমাণ গন্ধ লাগে। হাতে পায়ের তালু, আঙ্গুল, নখ, মুখ, চোখের সাদা অংশ হলুদ বর্ণ হয়ে যায়। সেই সাথে প্রসাব হলুদ হয়। বমি বমি ভাব হয় কখনো কখনো পেটে চিন চিন ব্যথা করে।
এই সব মিলে বোঝা যায় আপনার জন্ডিস হয়েছে এর পরে আপনি আস্তে আস্তে আরো সমস্যা বাড়তে থাকবে একসময় বড় রোগ হয়ে যেতে পারে কারণ শরীরের অপদার্থ জিনিসগুলো বের করে দিতে সাহায্য করে লিভার। আর রক্তের বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে লিভার কাজ করা বন্ধ করে দেয়, শরীরের রোগ জমা হতে থাকে। ফলে বড় বড় সমস্যা হতে পারে।
এই আসক্তি মূলত হেপাটাইটিস, এটি সরাসরি লিভারে আক্রমণ করে। এবং লিভার নষ্ট হতে থাকে। একটি সময় লিভারে পানি জমে। হলে রোগীকে তখন বাঁচানো অসম্ভ হয়ে পড়ে তাই অল্প থাকতে চিকিৎসা করুন অবহেলা সবকিছুর জন্যই ক্ষতিকর। কোন কিছুকে অবহেলা করে ফেলে রাখা উচিত নয়। সব বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি।

আজকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকের আর্টিকেলে জন্ডিস নিয়ে আলোচনা করেছি। লিভার জন্ডিসের লক্ষণ,লিভার জন্ডিস হলে কি করনীয়? আরো বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি জন্ডিস নিয়ে আপনার সমস্যার সমাধান পেয়েছেন। আর্টিকেলটি পরে যদি ভালো লাগে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন।

তারাও যেন জন্ডিস সম্পর্কে আগে থেকেই সতর্ক হতে পারে। আর আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে রাখবেন যাতে করে আপনি সবার আগে নতুন আপডেট খবর পেয়ে যাবেন। আর যে কোন সমস্যার সমাধান পেতে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url