পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া - ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া কি জানুন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া এবং ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া সহ আরো হাদিস আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। এছাড়াও পড়া মনে রাখার বৈজ্ঞানিক উপায় রয়েছে সে বিষয়গুলো জানিয়েছি। এখন বর্তমান পড়াশোনার প্রতি চাহিদা খুবই কম ছেলে মেয়ের।
এছাড়াও কোন সময়ে পড়লে মন ভালো থাকে এবং পড়ার আগে পড়ার দোয়া পড়তে হবে এবং পড়া মনে রাখার উপায় পড়া মনে রাখার দোয়া সহ আরো বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি এইসব বিষয়গুলো জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি সম্পন্ন করে আসুন।
ভূমিকা
বর্তমান সময়ে শিক্ষার হার ব্যবস্থা খুবই ভয়াবহ। পড়াশোনার প্রতি ছেলে মেয়ে তেমন কোন আগ্রহ নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন পড়াশোনার জন্য চাপ নেই। শিক্ষার হার দিন দিন নিম্নপর্দায় চলে যাচ্ছে।ছেলেমেয়েদের পড়ায় অমনোযোগী হওয়ায় শিক্ষার হার আজকে এই অবস্থা।
পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া
আল্লাহ তায়ালা চমৎকার একটি দোয়া দিয়েছেন যে দোয়াটি পড়লে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পড়ার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। হাদিসে স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক ভাবে দোয়া রয়েছে তার মধ্যে একটি দোয়া সচরাচর সবাই পড়ে থাকে। যে কোন কাজের সফলতা অর্জনের ভিত্তিতে আন্তরিকতা সহিত দোয়াটি পড়তে থাকবেন এবং অবশ্যই পড়ার প্রতি মনোযোগ আনার চেষ্টা করবেন এবং পড়তে বসবেন।
দোয়াটি হল-
বাংলা উচ্চারণঃ “সুবহানাকা লা ইলমা লামা ইল্লা মা আল্লামতানা, ইন্নাকা আমতাল আলিমুল হাকিম।”
বিশ্বস্ততার সহিত দোয়া পড়ে প্রার্থনা করতে হবে এবং পরবর্তী মনোযোগ আনার জন্য নিরিবিলি নিরিবিলি স্থানে পড়তে হবে তাহলে পড়ার মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে নিয়মিত পড়ায় মনোযোগ দেওয়ার দোয়া পড়তে হবে। পরে মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া পড়ার পাশাপাশি পড়ার সময় শান্ত মন ব্রেনের কোন চাপ রাখা যাবে না রোগ নিরিবিলি পরিবেশে পড়তে বসতে হবে।
ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া
ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া কোরআনুল কারীমে রয়েছে। বেশি বেশি জিকির করলে আল্লাহর স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি হয়। “যখন ভুলে যান তখন আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন।” (সূরা কাহাফ, আয়াত: ২৪) তাই আমাদের উচিত প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পরে তাসবীহ, তাহমিদ, তাহলিল পাঠ করা সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার প্রতি ওয়াক্তে ৩৩বার করে নিয়মিত পড়বেন এতে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে দেবে আল্লাহতালা।
পড়া মনে থাকে না কেন
পড়া মনে থাকে না কেন কারণ আমাদের পড়ার প্রতি মনোযোগটা যখন থাকে না তখন পড়া মনে থাকে না তাই পড়া মনে রাখতে হলে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। আর যখন আপনার মনোযোগ নিয়ে পড়ার প্রতি তখন পড়া দরকার নেই। পড়ার একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে সে সময়ে পড়লে পড়াটা তাড়াতাড়ি মুখস্ত হয় এবং পড়া মনে থাকে। সেই সময়টা হচ্ছে নিরিবিলি সময় রাতে শেষ রাতে।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে পড়া মনে থাকে না কেন সেটি হচ্ছে সবার একই নিয়মে পড়া মুখস্ত হবে তা বিষয়টা তেমন নয়। কারো মুখস্ত না করা পর্যন্ত পড়া মনে থাকে না আবার কেউ বুঝে বুঝে পড়লে পড়াটা তাড়াতাড়ি মনে আটকে যায়। আবার কেউ মুখস্ত করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। আবার কেউ হেঁটে হেঁটে মুখস্ত করলে তাড়াতাড়ি মুখস্ত হয়। কেউ নিরিবিলি মনে মনে পড়ে পড়া মুখস্ত করে কেউবা আবার উচ্চস্বরে পড়ে মুখস্ত করে।
পড়া মনে রাখার দোয়া
ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া ও পড়া মনে রাখার দোয়া ও আমল রয়েছে। আপনার যদি পড়া মনে না থাকে কিংবা অনেক পড়েন তবু মনে রাখতে পারেন না সে ক্ষেত্রে পড়া মনে রাখার জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করতে পারেন পাশাপাশি পড়াশোনায় মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই অল্প সময়ে আপনি পড়া মুখস্ত করে মনে রাখতে পারবেন।
পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া পাঠ করুন। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ব্রেন দিয়েছেন। তবে ব্রেনকে কাজে লাগাতে হবে। আর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য আল্লাহতালা মানুষকে বলেছেন দোয়া করতে এবং জিকির আজকের করতে
পড়া মনে রাখার দোয়া দোয়াটি হল-
বাংলা উচ্চারণঃ সুবহানাকা লা ইলমা লানা ইল্লা মা আল্লামতানা, ইন্নাকা আনতাল আলিমুল হাকিম।
অর্থাৎ-হে আল্লাহ আপনি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানিনা তবে আপনি আমাদিগকে যা শিখিয়েছেন সেইগুলো ব্যতীত নিশ্চয়ই আপনিই প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন হেকমতওয়ালা।
পড়ার আগে পড়ার দোয়া
পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া পাঠ করুন। আল্লাহ ছাড়া কোন কাজের সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। আপনি যখন পড়তে বসবেন তার আগে অর্থাৎ পড়ার আগে পড়ার দোয়া পড়ে বই পড়তে শুরু করবেন। আল্লাহর কাছে জ্ঞান বৃদ্ধি করার দোয়া,যাতে স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেয় এবং মনোযোগ সহকারে পড়া শুরু করবেন। বই পড়ার আগে পড়ার দোয়াটি হলো-
বাংলা উচ্চারণঃ- রাব্বি যিদনি ইলমা
অর্থাৎ- “হে আমার প্রতিপালক! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।”( সূরা ত্বাহা, আয়াত: ১১৪)
পড়া মনে রাখার উপায়
ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া ও পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া পাঠ করুন। পড়া বা কোন কিছু মনে রাখাই হল স্মৃতি শক্তি। স্মৃতিশক্তি প্রখর হলে কোন কিছু সহজে মনে রাখতে পারে। পড়া মনে রাখার উপায় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে দোয়া করা আল্লাহর দরবারে। জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করা যায়।
পড়া মনে রাখার বৈজ্ঞানিক উপায়
পমোডোরো পদ্ধতিঃ পড়াশোনার সময় হাতের কাছে মুঠোফোন বা কোন ধরনের ফোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস রাখা যাবে না। পড়াশোনার মাঝখানে হঠাৎ করে ফোন হাতে নিয়ে facebook youtube এ ঢুকে অন্য মানুষকে হয়ে যায়। তখন পড়াশোনা প্রতি মনোযোগ বসেনা। আর তখন পড়লে মনেও থাকে না।এর ফলে ব্যাঘাত ঘটে পড়াশোনার এবং পরবর্তীতে সে পড়া বেশিক্ষণ মনে রাখতে পারে না।
১৯৮০ সালে ফ্র্যাঞ্চেস্কো নামক এক উদ্যোক্তা পমোডোরো পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। পমোডোরো অর্থ টমেটো সস। টমেটো মত টেবিলে রাখার টেবিল ঘড়ির থেকেই নামকরণ করা হয়। তাই কাজ করার সময় অন্য সবকিছু থেকে দূরে রাখতে হবে পড়ায় মনোযোগ দিতে হবে এরপর কয়েক মিনিট বিরত হবে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য। এতে করে পড়ার প্রতি মনোযোগ বাড়ে এবং মনেও থাকে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমঃ যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের জেসিকা পেইন তার কতগুলো সহকর্মের নিয়ে একটি গবেষণা করেন। তারা বলেন পড়াশোনা শেষ করে নির্দিষ্ট সময় নিয়ে ঘুমালে সে পড়া পরবর্তীতে মনে থাকে। তাই লম্বা সময় পড়াশোনা করার পর কিছুক্ষণ ঘুমাতে হবে। পরিচিতভাবে দেখা গেছে যে অনেকেই আছে সারারাত জেগে পড়ে না ঘুমিয়ে সকালে উঠে পরীক্ষা দিতে গেছে তাদেরই পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। এর থেকে গবেষণায় নিশ্চিত করে পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমাতে হবে।
নেমোনিক পদ্ধতিঃকোন কিছু মনে রাখার জন্য কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা দরকার। যেমন পড়াশোনার মাঝে ছোট তথ্য গুরুত্বপূর্ণ সে ক্ষেত্রে আপনাকে মাথায় কিছু সহজ কৌশল আনতে হবে যাতে করে পরবর্তীতে আপনার প্রশ্নটি দেখা মাত্রই মনে পড়ে যায়। অনেক সময় বিভিন্ন সাল কিংবা ছোট ছোট গুরুত্বপূর্ণ উত্তর মনে থাকে না।
যেমন নামের ক্ষেত্রে একটি লেখকের নাম কিংবা বৈজ্ঞানিকের নাম কিংবা কোন কোন কিছু মনে রাখতে হলে আপনাকে ওই নাম ধরে একটি কৌশল ব্যবহার করতে হবে। যেমন ওই নামের সাথে কোন কিছু মিল রাখতে হবে এবং সেই কথাটি মনে রাখতে হবে তাহলে সহজে মনে করতে পারবেন।
ফাইনম্যান পদ্ধতিঃ পদার্থবিদ ডক্টর ফাইনম্যান একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। যেটা হচ্ছে কোন কিছু সহজেই মনে রাখার বা অন্যকে বোঝানোর পদ্ধতি এর নাম দেওয়া হয় ফাইনম্যান পদ্ধতি। যেমন কোন কিছু বুঝে পড়ার পর সেই বিষয়টি নিয়ে অন্যকে বোঝানো। এতে করে সহজেই সে বিষয়টি মনে থাকবে।
পড়ার পরে রিভিশন করাঃ জার্মান মনোবিদ হারমান এবিনঘস বলেন, আপনি যে বিষয় নিয়ে পড়তে শুরু করেছেন সম্পূর্ণ পড়া শেষ হয়ে গেলে প্রায় এক আধ ঘন্টা পর আপনি আবার পড়াটি পুনরাই করবেন এবার দেখবেন আপনার কতটুকু পরিমাণ মনে আছে যদি সে ক্ষেত্রেও ভুল হয় পরবর্তীতে আবার কিছুক্ষণ পরে আবারো পড়তে হবে। এভাবে কিছুক্ষণ থেমে থেমে রিভিশন দিলে পড়া মনে থাকে অনেক দিন পর্যন্ত। এটি একটি চমৎকার উপায় আমি মনে করি।
কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে
পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে বেশি। যখন তখন পড়তে বসলে পড়ার প্রতি মনোযোগ বাড়ে না এবং সেই পড়া বেশিক্ষণ মনে থাকে না। তাই ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া পড়ুন। কিছু সময় আছে যে ওই সময়ে পড়লে পড়া মনে থাকে সেই সময়টা হচ্ছে নিরিবিলি একটি সময় যখন মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকে তখন পড়লে পড়া মনে থাকে। এ কথা গবেষকরা বলেছেন।
বিশেষ করে পরীক্ষার সময় পড়ার চাপ হয় বেশি। এ সময়ে অন্য সবাইকে কাজে না লাগিয়ে পরীক্ষার সময় বেশি কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। তখন বই হাতে সারাক্ষণ থাকে কিন্তু অন্য সময় থাকে না। তবে ব্রেনকে রেস্ট না দিয়ে একাধারে পড়তে থাকলে পড়া মনে থাকবে না। তাই পরীক্ষার সময়ে আমাদের উচিত একটি রুটিন মাফিক পরা যখন আমাদের পড়াটা বেশি সময় লাগবে ওই সময়ে বেশি পড়তে হবে।
নিরিবিলি সময় বলতে ভোরের নামাজ শেষ করেই পড়তে বসবেন সকাল ৭ টা পর্যন্ত আপনি একটানা পড়তে পারেন। এরপর কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে সকালের নাস্তা খেয়ে, বাকি কাজ শেষ করে আবার ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একটানা পড়বেন। এরপরে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিয়ে আবার ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পড়বেন। সন্ধ্যা শেষে ৭টার দিক থেকে পড়া শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্তপড়বেন। এরপর খাওয়া-দাওয়া নামাজ পড়ে আবার পুনরায় পড়তে বসবেন একটানা ১২ পর্যন্ত পড়ে শেষ করবেন।
চেষ্টা করবেন সারাদিন ও রাতের পড়াগুলো ঘুমানোর আগে রিভাইস দিয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন। এই নিয়মে পড়া রুটিন অনুযায়ী পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন। তাহলে আপনার পড়া বেশি মনে থাকবে এই সময়গুলো পারফেক্ট সময়। ভোর রাতে ব্রেন ফ্রেশ থাকে বেশি থাকে না এমনকি আশেপাশের পরিবেশ নিরিবিলি থাকে যার কারণে পড়াটা অল্প তাড়াতাড়ি ট্রেনে ঢুকে যায় এবং মনে থাকে।
কোন সময় পড়া উচিত নয়?
পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া পাঠ করবেন। যেমন দ্বিপ্রহরে পড়া ঠিক না । এই পরিবেশে কখনো পড়া হবে না আরো ভোরের দিকে পড়তে পারেন কিন্তু রাত জেগে দুইটা পর্যন্ত কখনোই পড়া উচিত নয়। সকাল ১২ টার সময় একদম দ্বিপ্রহরর পড়তে বসলে পরে মনে থাকবে না। আবার বিকেলে কিছুক্ষণ রেস্ট নিতে হবে।১২টা পর্যন্ত পড়ার পর দ্রুত ঘুমিয়ে পড়বেন।
লেখকের মন্তব্য
আজকের আর্টিকেলে পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া ও ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া সহ পড়া মনে রাখার বৈজ্ঞানিক উপায় গুলো জানিয়েছি । আর্টিকেলটি পড়ে আশা করি একটু হলেও উপকৃত হয়েছেন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।
তারাও যেন পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে। আর এ ধরনের তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। তাহলে প্রতিনিয়ত তথ্য গুলো আপনি সবার আগে জানতে পারবেন।
সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url