গরুর পাতলা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে তুলে ধরেছি, গরুর পাতলা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা ও গর্ভবতী গরুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা সমূহ কিভাবে দিতে হবে। এখন বর্ষাকাল তাই গরুর ডায়রিয়া পাতলা পায়খানা বেশি হচ্ছে পাশাপাশি ছাগলেরও এ ধরনের রোগ হচ্ছে।
গরুর পাতলা পায়খানার কারণ ও গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেটের নাম সহ আরো বিস্তারিত তুলে ধরেছি। আপনি জানতে চাইলে আর্টিকেল কি ভালোভাবে পড়ুন।
গরুর পাতলা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা
গরুর পাতলা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা রয়েছে। এখন বর্ষাকাল এই সময়ে গবাদি পশুর রোগ বালাই বেশি হয়। বিশেষ করে পাতলা পায়খানা বেশি হয়। সপ্তাহে বন্যাকবলিত এলাকায় রোগে আক্রান্ত বেশি হয় কারণ বন্যার পানি এসে ঘাস পাতার মাঠ ঘাড় ডুবিয়ে ফেলে।
ফলে পানি চলে যাওয়ার পর যে নতুন ঘাস জন্মায় সেই ঘাস গবাদি পশুকে খাওয়ালে পেটের সমস্যা হয় ডায়রিয়া হয়। অনেকের সবগুলো ছাগলেরই পাতলা পায়খানা শুরু হয় বেশিরভাগই ছাগল বাচে না। বর্ষাকালের এই রোগ কে বলা হয় পিপিআর রোগে।
গরুর পাতলা পায়খানা হওয়ার কারণ
গরুর পাতলা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা কি? গরুর পাতলা পায়খানার কারণ অসংখ্য রয়েছে, যেমন দান দ্বার যুক্ত খাবার বেশি খেলে। পেট ফেপে উঠে পরবর্তীতে পাতলা পায়খানা হয়। আবার খাবারের মধ্যে ঘাসের মধ্যে বিভিন্ন জীবাণুর থাকলে ফলে ঘাসের সাথে খাওয়ার ফলে পেতে গিয়ে পাতলা পায়খানা হয়। পানিতে পচা ঘাস খাওয়ালে পাতলা পায়খানা হয়। বন্যার পানি চলে যাওয়ার পরে যে ঘাস থাকে ওই ঘাস খাওয়ালে গরু-ছাগলের হয়।
গরুর পাতলা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা
যে কারণে পাতলা পায়খানা হোক না কেন গরুর পাতলা পায়খানার প্রাকৃতিক চিকিৎসা রয়েছে। পাতলা পায়খানার পর থেকে ডায়রিয়া আরো জটিলতা হয়ে যায়। সেই সব রোগের ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা রয়েছে আপনি প্রথমে সেই টোটকা গুলো করতে পারেন। অনেক সময় গরু চিকিৎসার মাধ্যমে গরুর পাতলা পায়খানা দূর হয় আগে জানি পাতলা পায়খানা কয়েক ধরনের এবং জেনে সেই ভাবে ট্রিটমেন্ট দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ গবাদি পশু আচরণ কিছু পরিবর্তন দেখে বুঝে নিতে হবে।
প্রাকৃতিক উপায়ে গরুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা করা যায়। যেমন কিছু গাছ গাছড়ার মধ্যে দিয়ে পাতলা পায়খানা দূর করা যায়। নিচের তালিকায় কয়েকটি পদ্ধতি তুলে ধরা হলো জেনে নিন।
ডালিম বা বেদনা পাতার রসঃ গরু যখন পাতলা পায়খানা হয় তখন ডালিম গাছের পাতা থেতে করে বের করে সেই রস খাবারের সাথে কিংবা বোতল দিয়ে খাইয়ে দিন। দিনে দুইবার করে খাওয়াতে থাকুন দুই-একদিনের মধ্যে পাতলা পায়খানা কমে যাবে। কিংবা ডালিমের রস করেও খেতে পারেন খোসা রোদে শুকিয়ে নিয়ে গুড়ো করে খাওয়াতে পারেন।
জিগা গাছের ছালঃ জিগা গেছে ছাল রস করে গরুকে খাইয়ে দেন, তাহলে ডায়রিয়া কমে যাবে।
চা পাতাঃ আপনি গরুর পাতলা পায়খানা কমাতে চা পাতা খাওয়ান। এটি গরুর পাতলা পায়খানা দূর করে আপনি চাইলে চার হোস্টেল থেকে যারা তৈরি করে সেখানে চায়ের লিগারগুলো থাকে সে লিগারগুলো এনে গরুকে খাওয়াতে পারেন। এতে কমে যাবে তবে বাসি লিগার খাওয়ানো যাবে না।
বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার কারণে পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে
নরমাল পাতলা পায়খানাঃ অতিরিক্ত দানাদার খাবার খাওয়ার ফলে হজম শক্তির ব্যাঘাত ঘটে।এতে পাতলা পায়খানা করে। কিংবা খাবারের ব্যাকটেরিয়া থাকলে সেই খাবার খেলে পাতলা পায়খানা হয়।
ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানাঃ হঠাৎ করে পায়খানা শুরু হয়ে যায়। এটাই হচ্ছে ডায়রিয়া জনিত রোগ পাতলা পায়খানা কারণ কোন খাবারের মধ্যে জীবাণু থাকার কারণে পেটে গিয়ে ডায়রিয়া পেট খারাপ হয়েছে। তাই দ্রুত ঘরোয়া চিকিৎসা দিতে পারেন এতে না কমলে পাতলা পায়খানা বন্ধ হওয়ার পাউডার খাওয়াবেন।
বিপাকীয় পাতলা পায়খানাঃ পাতলা পায়খানা বিপাকীয় পর্যায়ের হয় তখন এই গরুর দীর্ঘদিন পর্যন্ত পাতলা পায়খানা থেকে যায়। চিকিৎসা দেওয়ার পর ভালো হয়ে যায় পুনরাই আবার কিছুদিনের মধ্যে আবার হয় এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকে একে বলে বিপাকীয় পর্যায়ের পাতলা পায়খানা। কখনো পাতলা পায়খানা বাড়ে আবার কখনো কমে যায়। এভাবে চলতে থাকলে গরু দিন দিন কঙ্কাল হয়ে যায় পাশাপাশি টাকা খরচ হয়। এ ধরনের গরু এভাবে থাকতে থাকতে একসময় মারা যায়।
এসব গরুর চিকিৎসা রুচির পাউডার খাওয়াতে হবে এবং বৃদ্ধি করার জন্য পাউডার খাওয়াতে হবে। লিভার্টনিক সিরাপ প্রতিদিন একবার করে ১৫ থেকে ২০ দিন খাওয়াতে হবে। জিংক সিরাপ এবং বায়োগট পাউডার খাওয়ান। এবং দানাদার যুক্ত খাবার খাওয়াবেন না। নরমাল খাদ্য দিবেন এবং গরুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন। পরিষ্কার পানি খাওয়াবেন।পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খাওয়াতে পারেন।
পাতলা পায়খানা ভালো হওয়ার পরে বায়োলাক্ট ভেট ট্যাবলেট খাওয়াবেন। অবশ্যই যে গরুর পাতলা পায়খানা হয়েছে সেগুলোকে আলাদা রাখতে হবে। তাহলে অন্য গরুর পাতলা পায়খানা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। গরুর মাংস ও দুধ উৎপাদনে কম হওয়ার এই রোগ অন্যতম কারণ হতে পারে। তাই দ্রুত সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে এবং পরিচর্যা করা লাগবে।
গর্ভবতী গরুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা
গর্ভবতী গরুর জন্য সব ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। এতে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যেসব ওষুধে ক্ষতির সম্ভাবনা নাই সেই ঔষধ গুলো খাওয়াতে হবে। গর্ভবতী গরুদের জন্য কি কি ওষুধ খাওয়াতে পারেন আসুন জেনে নেই।
- মেট্রানিডাজলভেট বোলাস বা ট্যাবলেট ২০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য প্রতিদিন ছয়টি করে দিনে একবার খাইয়ে। যতক্ষণ পর্যন্ত পাতলা পায়খানা বন্ধ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত খাওয়াতে থাকবেন না।
- জিংক সিরাপ ১৫ থেকে ২০ মিলি করে দিনে দুইবার খাওয়ান। সকালে ও রাতে দুইবার খাওয়াবেন।
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ইনজেকশন প্রয়োগ করতে পারেন। আর যখন পাতলা পায়খানা ভালো হয়ে যাবে তখন গরুকে biolact vet প্রতিদিন একটি করে ১৫ দিন খাইয়ে দিবেন।গবাদি পশু গর্ভবতী গরুর জন্য যেসব ওষুধ রয়েছে ঠিক একইভাবে গরুর বাছুর কেউ খাওয়াতে পারবেন।
গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম
গরুর পাতলা পায়খানার ট্যাবলেট এর নাম জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলের মধ্যে ধাপে ধাপে গরুর বাছুর থেকে বড় গরুকে কি কি ওষুধ খাওয়াতে হয় জেনে নিন।
বড় এড়ে বা বলদ গরুঃ জিংক খাবেন প্রতিদিন 15 থেকে 20 মিনিটে করে দুইবার পায়খানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত। বায়োগাট পাউডার খাওয়ান১০০ কেজি গরুর জন্য দুইবার খাওয়াবেন ১০ গ্রাম করে। এসএমএস ভেটেনারি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গরুকে ঔষধ খাবার দিন।
সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url