গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল - গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, আজকের আটিকে নিয়ে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল ও গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয় বিস্তারিত তুলে ধরেছি। এছাড়াও আর্টিকেলের মধ্যে তুলে ধরেছি ইসলামে গর্ভবতী মায়ের করনীয়, ইসলামে গর্ভবতী মায়ের আমল সমূহ।
গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল
একজন মা হিসেবে আপনার দায়িত্ব সন্তানকে সঠিক পথে গড়ে তোলার। তাই অবশ্যই আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করবেন বেশি বেশি। যাতে করে আল্লাহ তাআলা আপনার সন্তানকে বুদ্ধিমান জ্ঞানী সম্মানিত করে তুলবে। এবং গর্ভাবস্থায় মাকে আমলগুলো পালন করতে হবে তার সন্তানের উপর প্রভাব পড়বে। আজকের আর্টিকেল থেকে একজন গর্ভবত বা অনেক কিছু শিখতে পারবেন ইনশাল্লাহ।

ইসলামে গর্ভবতী মায়ের আমল

ইসলামে গর্ভবতী মায়ের আমল করতে হয় তাহলে গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল আল্লাহতালা  নেক সন্তান দান করুন সৎ সন্তান দান করুন এবং ইউসুফ এর মত সুদর্শন করুন, আমার মত ধৈর্যশীল সন্তান দান করুন এবং গর্ভাবস্থায় সুস্থ রাখে। তাই আমাদের আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশি বেশি আমল করতে হবে। আল্লাহর নামে জিকির করতে হবে।

বাংলা উচ্চারণঃ রাব্বি হাবলি মিনাস্ ছলিহিন।

অর্থাৎ- হে আমার সৃষ্টি কর্তা আমাকে সৎ সন্তান দান করুন।

এছাড়াও আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নাম যদি কোন মহিলা গর্ভবতী অবস্থায় জিকির করতে থাকে তাহলে আল্লাহতালা গর্ভকালীন কষ্ট দূর করে দেয়। যেমন “আল মুতাআলি” এবং “আল মুবদিয়ু” গর্ভাবস্থায়ী একজন মা যে কাজ করবে সেটা বাচ্চার উপর প্রভাব পড়বে তাই যত বেশি আল্লাহর উপর আমল করবে তার প্রভাব তার সন্তানের উপর পরবে।

সন্তান গর্ভে যখন ২০ সপ্তাহ বয়স হয় তখন থেকে কিছু না সক্ষমতা হয়। তাই এই সময় মায়ের বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা, আল্লাহর জিকির করা বেশি বেশি দরকার। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন তোমাদের উপর কোরআন শিক্ষা গ্রহণ করা অবশ্য এবং তোমাদের সন্তানদের শিক্ষা দেবে। কেননা এই বিষয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এবং অবশ্যই তার প্রতিদান ও দেয়া হবে।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা সুরক্ষিত রাখার আমল

গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল কি? একজন নারীর মা হওয়া তার নারীত্ব সাকসেস হয়। এবং সেই মা যদি তার সন্তানকে একটি স্বচ্ছ সন্তান এবং দ্বীনদার সন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে পারে আল্লাহ তাআলা এই পুরস্কার দেবেন।

রাসূল সাঃ বলেছেন, উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহাকে বলেছিলেন, তোমাদের কেউ কি এত খুশি নয় যে তারা স্বামীর পক্ষ হতে গর্ভবতী হয় এবং তার স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকে এবং সে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বদা রোজা পালনকারী সারারাত ইবাদত পালনকারী ব্যক্তির মতো সওয়াব পেতে থাকবে।

গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়

গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয় একজন গর্ভবতী মাকে তা অবশ্যই জানতে হবে এবং আমল করতে হবে। তাহলে সন্তান দামি সুন্দর এবং ধৈর্যশীল এবং বুদ্ধিমান, দ্বীনদার হবে। তাই অবশ্যইএই কাজগুলো দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পৃথিবীর সবই চায় তার সন্তান সৎ চরিত্রের এবং দ্বীনদার, দামি হবে। তাই অবশ্যই আমল করার জন্য আমলগুলো জানতে হবে। চলুন দেখে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়।

গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসের আমলঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মা প্রথম মাসে সূরা “আল ইমরান” ও সূরা “আল ইনশিক্কাক “ তেলাওয়াত করতে হবে। তাহলে সেই গর্ভবতী মায়ের সন্তান দামি এবং দ্বীনদার হবে। এবং সূরা ইনশিক্কাক তেলাওয়াত করলে গর্বে সন্তান নিরাপদে থাকবে।

গর্ভাবস্থায় দ্বিতীয় মাসের আমলঃ একজন গর্ভবতী মা দ্বিতীয় মাসে যদি সূরা “আল ইউসুফ” তেলাওয়াত করে তাহলে তার সন্তান ইউসুফ নবীর মত সুদর্শন হবেএবং সন্তানের মানসিকতাও ভালো হবে সুচরিত্রের অধিকারী হবে।

গর্ভাবস্থায় তৃতীয় মাসের আমলঃ গর্ভাবস্থায় তৃতীয় মাসে যদি কোন মা সূরা “আল মরিয়ম” পাঠ করে তাহলে ওই গর্ভবতী মায়ের গর্ভের সন্তান ধৈর্যশীল ও পরহেজগার সন্তান লাভ করবে। একজন ধৈর্যশীল বান্দাকে আল্লাহতাআলা বেশি পছন্দ করেন।

গর্ভবতী অবস্থায় চতুর্থ মাসের আমলঃ একজন গর্ভবতী মা যদি সূরা “আল লোকমান” তেলাওয়াত করে তাহলে সে গর্ভবতী মায়ের গর্ভের সন্তান সুবুদ্ধিমতি ও মেধাবী হবে। একজন মা অবশ্যই চায় তার সন্তান বুদ্ধিমান মেধাবী হোক।

গর্ভবতী অবস্থায় ষষ্ঠ মাসের আমলঃ একজন গর্ভবতী মা তার সন্তানের জ্ঞান বুদ্ধি অবশ্যই চাইবে তাই তার সন্তানকে জ্ঞানী বানাতে চাইলে বেশি বেশি সূরা “আল ইয়াসিন” তেলাওয়াত করতে হবে।তাহলে আল্লাহতালা তার সেই মায়ের সন্তানকে জ্ঞানী বানিয়ে দেবেন।

প্রত্যেক মা কে তার সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে তাকে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার কাছে আনা যেতে হবে এবং সন্তানের জন্য সুমঙ্গল চাইতে হবে এবং তার জন্য গর্ভাবতী থাকা অবস্থায় বেশি বেশি আমল করতে হবে। তাহলে আল্লাহ তাআলা সেই মাকে উত্তম চরিত্রের সন্তান দান করবে।

তাই একজনগর্ভবতী মা তার সন্তানের জন্য এইসব আমলগুলো অবশ্যই করতে পারেন তাহলে আল্লাহ তাআলা খুশি হয়ে আপনার সন্তান নেক সন্তান দান করবে যা দুনিয়াতে এসে সম্মানিত হবে বুদ্ধিমান সুন্দর সত্যের অধিকারী হবে অবশ্যই একজন মা হিসেবে আপনি আপনার সন্তানকে এভাবে গড়ে তুলবেন। তার জন্য আপনাকে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি আমল করতে হবে। দোয়া প্রার্থনা করতে হবে, নামাজ কায়েম করতে হবে কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে।

ইসলামে গর্ভবতী মায়ের করনীয়

গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল ইসলামে গর্ভবতী মায়ের করনীয় রয়েছে তা অবশ্যই। একজন মা সন্তান গর্ভে ধারণ করার পর তার সন্তানের প্রতি দায়িত্ব চলে আসে। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের চলাচল তার সন্তানের উপর প্রভাব পড়ে। তাই গর্ভবতী মাকে অবশ্যই সৎ পথে চলতে হবে এবং বেশি বেশি আমল করতে হবে। গর্ভাবস্থায় মা যদি কাজ করে হারাম খাবার খায় হারাম পথে চলে এবং নাচ গান সিনেমা নাটক নিয়ে পড়ে থাকে তাহলে এই সন্তানের উপর প্রভাব পড়তে পারে।

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মাইয়া অস্থিরতা কাজ করে এ সময় বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করতে হবে নামাজ কায়েম করতে হবে তাহলে আল্লাহ তায়ালা অন্তরকে প্রশান্ত করে দেয়। এজন্য নামাজের সময় হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কে বলেন, নামাজের ব্যবস্থা করো এবং তার মাধ্যমে আমাকে তৃপ্ত কর। (আবু দাউদ ৪৩৩৩)

গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয় জানুন। একজন মায়ের গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি আমল করতে হবে পেটের সন্তানের জন্য দোয়া করতে হবে। নেক সন্তানের জন্য দোয়া করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল

গর্ভাবস্থায়ী একজন গর্ভবতী মাকে প্রতি মাসে আমল করতে হবে। যেন তার সন্তান নিরাপদে থাকে এবং সন্তান জন্মের পরে যেন সুবুদ্ধিমান জ্ঞানী সুদর্শন হয়। তার জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি পানাহ চাইতে হবে। গুনাহ থেকে দূরে থাকতে হবে। বেশি বেশি ইবাদত করতে হবে। মনে রাখবেন আপনার সন্তান পেটের ভেতরে বড় হবে এবং আপনার চরিত্রের উপর প্রভাব পড়বে। তাই আপনি যে সব কাজগুলো গর্ভাবস্থায় করবেন তা আপনার সন্তানের উপর প্রভাব পড়তে পারে। তাই আপনাকে কিছু আমল অবশ্যই করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল যেমন ধৈর্যশীল হতে হবে যাতে করে সন্তান বড় হলে আপনার মত ধৈর্যশীল হয়। আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন। এই সময় বেশি রাগী হওয়া যাবে না অহংকার করা যাবে না যা আল্লাহতাআলা পছন্দ করেন না সেসব কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।

বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত করতে হবে কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে নামাজী হতে হবে, তাহলে আপনার সন্তানও পৃথিবীতে এসে আল্লাহর ইবাদত করবে। হযরত আব্দুল কাদের জিলানীর মা গর্ভাবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করতেন তা তিনি গর্ভে থাকা অবস্থায় কোরআন মুখস্ত করেছেন মায়ের তেলাওয়াত শুনে শুনে।

রাত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যান এবং শেষ রাতে আল্লাহ তায়ালার কাছে মোনাজাতে আপনার গর্ভের সন্তান নেক সন্তান এবং সুস্থ সন্তানের প্রার্থনা করুন। আল্লাহ তায়ালা শেষ রাতের ডাক বেশি শুনেন। যথাসময়ে নামাজ কায়েম করুন।

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বেশি বেশি জিকির করুন আল্লাহর ৯৯ টি নামের মধ্যে নাম গুলো জিকির করুন তাসবিহ্ পাঠ করুন। মনের মধ্যে অস্থিরতা ভাব দূর করুন। বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করুন চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মধ্যে থেকেই গর্ভের বাচ্চা শোনার সক্ষমতা পায় তাই আপনি যে সব আমল গুলো করবেন আপনার সন্তান সেসব আমলগুলো শুনতে পাবে আর আপনি যদি অন্যায় কাজ এবং অশ্লীল ছবি গান ভিডিও এসব নিয়ে থাকেন আপনার সন্তান সে সবগুলো শুনতে পাবে তাই অবশ্যই আপনি ভালো কাজে লিপিবদ্ধ থাকুন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ আর্টিকেলটি ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। এর আর্টিকেলের মধ্যে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি, ইসলামে গর্ভবতী মায়ের আমল ও গর্ভাবস্থায় কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়, গর্ভাবস্থায় প্রতি মাসের আমল সমূহ। একজন গর্ভবতী মায়ের এই সব আমল গুলা অবশ্যই করা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি আপনি এই নিয়ম অনুযায়ী পালন করতে পারবেন।

আর অন্যান্য আরো গর্ভবতী মায়েদের আমল করার জন্য পোস্টটি শেয়ার করে দিতে পারেন। যাতে করে তারাও গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত করতে পারে এবং এ ধরনের তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। কারন এখানে বিভিন্ন জ্ঞান মূলক তথ্য পাবলিস্ট করা হয়।




















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাবিহা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url